Advertisement
Advertisement

Breaking News

ডোকরার দুর্গা

বেলেঘাটার মণ্ডপে যাবে ১০ ফুটের ডোকরার দুর্গা, ব্যস্ততা তুঙ্গে আউশগ্রামের শিল্পীদের

এই দুর্গাপ্রতিমা তৈরি করতে প্রয়োজন হয়েছে ৫ কুইন্টাল পিতল।

Artisans 10 feet 'Dokra durga' will be showcased in Beleghata's Pandal
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:August 28, 2019 3:02 pm
  • Updated:August 28, 2019 3:03 pm  

ধীমান রায়, কাটোয়া: আউশগ্রামের দ্বারিয়াপুরের ডোকরা শিল্পীদের হাতে তৈরি ১০ ফুটের দুর্গাপ্রতিমা এবছর শোভা পাবে কলকাতার বেলেঘাটার একটি পুজোমণ্ডপে। তার জন্য দিনরাত এক করে প্রতিমা তৈরি করে চলেছেন ডোকরাপাড়ার পুরুষ ও মহিলা মিলে ১৪ জন ডোকরা শিল্পী। এই দুর্গাপ্রতিমা তৈরি করতে প্রয়োজন হয়েছে ৫ কুইন্টাল পিতল, ৩০ কুইন্টাল কয়লা, ৩০ কেজি ধুনো, ৫০ কেজি মোম এবং কিছু কাঠ। চার লক্ষ টাকার বরাত। দ্বারিয়াপুরের ডোকরা শিল্পীদের হাতে তৈরি চারলাখি দুর্গাপ্রতিমা এবছর শোভা পাবে বেলেঘাটা ৩৩ পল্লির পুজোমণ্ডপে।

পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রামের দ্বারিয়াপুর গ্রাম ডোকরা শিল্পীদের গ্রাম বলে পরিচিত। এই গ্রামে ৬০-৬২টি পরিবারের বসবাস। তারা প্রায় প্রত্যেকেই ডোকরামূর্তি তৈরির পেশায় যুক্ত। রাজ্যজুড়েই নাম রয়েছে দ্বারিয়াপুরের ডোকরা শিল্পের। ভোরের আলো ফুটতেই দ্বারিয়াপুর গ্রামে ঘরে ঘরে উনান জ্বেলে শুরু করে দেন মূর্তি তৈরির কাজ। পরিবারের সকলে সারাদিন মূর্তি তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকেন।

Advertisement

[ আরও পড়ুন: আয় বাড়াতে মিড-ডে মিল রাঁধুনিদের ১০০ দিনের কাজে যুক্ত করার ভাবনা মুখ্যমন্ত্রীর ]

docra-3

দ্বারিয়াপুরের ডোকরা শিল্পী শুভ কর্মকার, রাজেশ কর্মকাররা বলেন, “প্রায় দেড় মাস আগে কলকাতার ওই ক্লাবের কর্মকর্তরা আমাদের কাছে এসে ১০ ফুটের দুর্গামূর্তি তৈরির বরাত দিয়ে গিয়েছিলেন। তারাই মূর্তির নক্সা ঠিক করে দেন। সেই ডিজাইন অনুযায়ী মুর্তি তৈরি করছি। কাজ প্রায় শেষের দিকে। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে মূর্তি মণ্ডপে পৌছে দেওয়া হবে।” শুভবাবু জানিয়েছেন এর আগে তারা কোনওদিন এতবড় মূর্তি তৈরির বরাত পাননি।

ডোকরা একটি অতি প্রাচীন শিল্প। দ্বারিয়াপুরের ডোকরাপাড়ার শিল্পীরা বংশপরম্পরায় এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। ডোকরা মূর্তি তৈরির পদ্ধতিটিও একটু অভিনব। শিল্পীরা জানিয়েছেন, প্রথমে ধুনোর গুঁড়ো, মোম ও তেল দিয়ে মাখিয়ে মণ্ড তৈরি করা হয়। অল্প অল্প তাপ দিয়ে পিচের মতন নরম করে সেই মণ্ড দিয়ে একটু একটু করে মুর্তির আদল তৈরি করা হয়। মূলত এই মণ্ড দিয়েই প্রথমে গডে তোলা হয় মূর্তির আদল। তারপর পলি মেশানো নরম কাদামাটি ধীরে ধীরে সেই মূর্তির ওপর নিখুঁতভাবে সাঁটিয়ে দেওয়া হয়। নরম মণ্ডের তৈরি মুর্তিটি চারিদিক ঢেকে দেওয়া হয় নরম কাদামাটিতে। শুধু একটা সরু ছিদ্র রাখা হয়। রোদে শুকানো হয় সেই কাদামাটি। কাদামাটি শুকিয়ে গেলে আগুনে পোড়ানো হয়। তখন কাটামাটির ভিতরের ধুনো ও মোম আগুনের তাপে গলে ছিদ্র দিয়ে বেড়িয়ে আসে। ভিতরেই তৈরি হয়ে যায় ত্রিমাত্রিক ছাঁচ। পরে পিতল গলিয়ে সেই ফাঁকে ভরে দেওয়া হয়। ঠান্ডা হলে পোড়া মাটি ভাঙলে বেড়িয়ে আসে পিতলের মূর্তি। তারপর পালিশ করে চুড়ান্ত রুপ দেওয়া হয়। এটাই ডোকরা মূর্তি তৈরির কৌশল বলে জানিয়েছেন শিল্পীরা। তবে বড় মূর্তির ক্ষেত্রে এক একটি অংশ আলাদাভাবে তৈরি করা হয়। তারপর ঝালাই করে জুড়ে দেওয়া হয়।

dokra-2

কলকাতা পুজো কমিটির বরাত পেয়ে দ্বারিয়াপুরের ৭ জন মহিলাশিল্পী-সহ ১৪ জন মিলে ১০ ফুটের দুর্গাপ্রতিমা তৈরি করছেন। শুভবাবুদের সঙ্গে সমানভাবে খেটে চলেছেন সাধনা কর্মকার, প্রতিমা কর্মকাররাও। দুর্গা, গণেশ, কার্তিক, লক্ষ্মী ও সরস্বতী পৃথক পৃথক ভাবে তৈরি করা হয়েছে। পদ্মের ওপর উপবিষ্টা প্রতিমা এই মুর্তিগুলির জন্য চারলক্ষ টাকার বরাত দেওয়া হয়েছে বলে শিল্পীরা জানিয়েছেন।

ছবি: জয়ন্ত দাস

[ আরও পড়ুন: বিপুল পরিমাণে বাড়ছে জরিমানা, কেন্দ্রের নয়া ‘মোটর যান আইন’ মানতে নারাজ রাজ্য ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement