চন্দ্রজিৎ মজুমদার, কান্দি: সোমবার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ছেলে। আর তারপর থেকে কেঁদেই চলেছেন বেলারানি সাহা। তিনি মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার মা। বিশ্বাস করেন, তাঁর ছেলে নির্দোষ। একই মত জীবনকৃষ্ণর মামা শ্যামল সাহাও। তিনি জানাচ্ছেন, কোথাও যেন ভুল হচ্ছে। তাঁর ভাগ্নের জীবনে যে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে তা তিনি স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি।
শুক্রবার যখন জীবনকৃষ্ণর বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি শুরু হয় তখন থেকেই উৎকণ্ঠায় ভুগতে শুরু করেন তাঁর মা। ছেলের গ্রেপ্তারির পর থেকে তাঁর চোখের জল যেন শুকোতেই চাইছে না। বেলারানি জানাচ্ছেন, ”আমার ছেলে জীবন নির্দোষ। ওকে মুক্তি দিন। কোথাও যেন ভুল হচ্ছে। আমি ওকে জন্ম দিয়েছি। আমার থেকে বেশি কেউ ওকে চেনে না। ছোট থেকেই অভাব অনটনের মধ্যে দিন কেটেছে। নানা পারিবারিক অত্যাচার সহ্য করেছে জীবন। পারিবারিক সমস্যার কারণে বাবার বাড়িতেই থাকি ভাইদের সঙ্গে। কিন্তু ছেলে আমাকে সব সময় সব রকম সাহায্য সহযোগিতা করেছে। প্রতি মাসে হাতখরচের পাশাপাশি জামাকাপড় সবই এসে দিয়ে যেত। এমনকী, আমি তীর্থে গেলেও টাকাপয়সা দিয়ে সাহায্য করত। দিনে অন্তত দু’বার ফোন করত। যেদিন বিধায়ক হল মাথায় হাত দিয়ে আশীর্বাদ করে বলেছিলাম আরও বড় হও।”
তাঁর কথায়, ”জীবনে বহু সংগ্রাম করে পারিবারিক সমস্যা কাটিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে আমার ছেলে। জীবন যে বড় হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষক দুর্নীতি মামলায় জড়িয়ে পড়বে ভাবতেও পারিনি। পারলে হয়তো সতর্ক করতাম। অনুরোধ করতাম অন্যায় পথের রোজগারের অর্থ থেকে দূরে থাকতে। কিন্তু আমাকেও কিছু জানায়নি কোনদিন। আমার মনে হয় কোথাও ভুল হচ্ছে। ওকে কেউ ভুল পথে চালিত করেছে। আমার ছেলেকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমি সরকারের কাছে ছেলের মুক্তি প্রার্থনা করছি।”
জীবনকৃষ্ণর মামা শ্যামল সাহাও ভেঙে পড়েছেন ভাগ্নের গ্রেপ্তারির খবরে। জানাচ্ছেন, তাঁর ভাগ্নে খুবই চাপা স্বভাবের। তাঁর এই পরিণতি তিনি ভাবতে পারছেন না। এদিকে সিবিআই আধিকারিকদের হিসেব বলছে, তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৩০০ কোটি ছাড়াতে পারে। তাঁকে গ্রেপ্তার করে চারদিনের হেফাজতে নেওয়ার পর এখন সিবিআইয়ের নজরে বিধায়কের এই বিপুল সম্পত্তি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.