Advertisement
Advertisement
জেএমবি

মঙ্গলকোটে মাদ্রাসার আড়ালে জেএমবির জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বানাচ্ছিল ধৃত আসাদুল্লা

খাগড়াগড় কাণ্ড না হলে সম্পূর্ণ হত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরির কাজ, আশঙ্কা স্থানীয়দের।

Arrested JMB terrorist Asahdula sheik want to build terrorist training centre

এই সেই নির্মীয়মাণ মাদ্রাসা

Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:September 14, 2019 9:15 pm
  • Updated:September 14, 2019 9:43 pm  

ধীমান রায়, কাটোয়া: মঙ্গলকোটের নিগনের তামিলপুকুর পাড়ের কাছে তৈরি হচ্ছিল একটি মাদ্রাসা। সেখানে জামাতুল মুজাহিদিনের পশ্চিমবঙ্গ শাখার অন্যতম প্রধান কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছিল জঙ্গিরা। খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডের কয়েকমাস আগে থেকে ওই মাদ্রাসার নির্মাণকাজ শুরুও হয়ে গিয়েছিল। এর জন্য যে ২৫ কাঠা জমি কাজে লাগানো হচ্ছিল তার অন্যতম মালিক কয়েকদিন আগে এসটিএফের হাতে ধরা পড়া ভাতারের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আসাদুল্লা শেখ। সূত্রের খবর, চেন্নাই থেকে তাকে ধরার পর নিগনের মাদ্রাসা নিয়ে আসাদুল্লাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন গোয়েন্দারা।

[আরও পড়ুন: স্টেশন প্রহরার পুলিশ বারাকে ঘুমিয়ে থাকায় খুন হতে হল বিশ্বজিৎকে]

২০১৪ সালের ২ অক্টোবর, খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরেরদিনই মঙ্গলকোটের শিমুলিয়া মাদ্রাসার সঙ্গে তার যোগসূত্র জেনে যান তদন্তকারী আধিকারিকরা। শিমুলিয়া মাদ্রাসায় তদন্ত করতে গিয়ে এনআইএ আধিকারিকরা খবর পান নিগনের তামিলপুকুর পাড়ের কাছে ২৫ কাঠা জমি কিনে ইউসুফ, বোরহান ও আসাদুল্লা শেখদের তত্বাবধানে তৈরি হচ্ছে একটি মাদ্রাসা। ২০১৩ সালের মার্চ মাসে কৃষ্ণবাটি গ্রামের বাসিন্দা মধূসুদন ঘোষ, বৃন্দাবন ঘোষ এবং বুদ্ধদেব ঘোষ নামে তিন কৃষকের কাছে ওই ২৫ কাঠা জমি কেনা হয়েছিল। কৃষ্ণবাটি গ্রামের বাসিন্দা ও জেএমবির অন্যতম মাথা ইউসুফের মধ্যস্থতায় জমিটি কেনা হলেও তার মালিকানা ইউসুফের নামে নেই বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

তদন্তকারী আধিকারিকরা আরও জানতে পেরেছেন, ২০১৩ সালের ৩ মার্চ নতুনহাট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ২৫ কাঠা জমি কেনা হয়েছিল তিনজনের নামে। তিন মালিকের মধ্যে আসাদুল্লার অংশ ৫ কাঠা, ইউসুফের বন্ধু কাঠমিস্ত্রি বোরহানের অংশ পাঁচ কাঠা এবং বাকি ১৫ কাঠা কেনা হয়েছিল বদরুজ্জামান শেখের নামে। বহরমপুরের উপরডিহি গ্রামের বাসিন্দা বদরুজ্জামান কেতুগ্রামের মউগ্রাম হাইস্কুলের আরবি শিক্ষক। এরপর ওই শিক্ষককে একাধিকবার তলব করেছিল এনআইএ। যদিও তদন্তকারীদের কাছে ওই শিক্ষক তখন জানিয়েছিল তার মেয়ে শিমুলিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করত। সেই সুবাদে ইউসুফ ও বোরহানের সঙ্গে পরিচয়ের পর যৌথভাবে জমি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সে। এদিকে এই মাদ্রাসার খোঁজ পাওয়ার পরেই ভাতারের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আসাদুল্লাকে তলব করে একাধিকবার নোটিস পাঠিয়েছিল এনআইএ। নোটিস পাঠানো হয়েছিল বোরহানের বাড়িতেও। কিন্তু খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় আসাদুল্লা ও বোরহানরা। স্বামী পালিয়ে যাওয়ার পরে দুই মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যায় আসাদুল্লার দ্বিতীয় স্ত্রী হালিমা বিবিও। তারপর থেকে আর আসাদুল্লার হদিশ পাননি তদন্তকারী আধিকারিকরা।

[আরও পড়ুন: নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে স্বামীর সঙ্গে অনুপ্রবেশ, গাইঘাটায় ধৃত রোহিঙ্গা যুবতী]

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খাগড়াগড় কাণ্ডের ৬-৭ বছর আগে থেকেই প্রথম স্ত্রী নূর নীহারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল আসাদুল্লার। তারপর সে কুলসোনা গ্রামের মেয়ে হালিমাকে বিয়ে করে। মঙ্গলকোটের কুলসোনা গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম সম্প্রতি খাগডাগড় কাণ্ডে সাজা পেয়েছে। তাই দ্বিতীয় বিবাহের পর থেকেই আসাদুল্লার সঙ্গে জেএমবির সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।

বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্যসড়কের গায়েই ভাতারের তামিলপুকুর। তার চারপাশে ঘন জনবসতি। পুকুরের পশ্চিমদিকে ২০০ ফুটের মধ্যেই কয়েকটা জমি পেরিয়ে এখনও দাঁড়িয়ে রয়েছে অসমাপ্ত মাদ্রাসার কাঠামো। প্লাস্টারহীন ইটের দেওয়ালে স্থানীয়রা কেউ ঘুঁটে দেন। আর মাদ্রাসার জমিতে চড়ে গরু। তবে সেখানে ঘেঁষতে দেখা যায় না বোরহান, আসাদুল্লা বা আরবি শিক্ষকের পরিবারের কাউকেই। খাগডাগড় বিস্ফোরণকাণ্ড না ঘটলে হয়ত এতদিনে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে যেত তামিলপুকুর পাড়ের জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। আর তাকে ঘিরে জেএমবির জাল এতদিনে বিছিয়ে ফেলতে পারত আসাদুল্লা ও ইউসুফরা। আসাদুল্লা ধরা পড়ার পর এটাই ভেবে শিউরে উঠছেন স্থানীয়রা।

ছবি: জয়ন্ত দাস

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement