বারাকপুরের বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিং।
অর্ণব দাস, বারাকপুর: উনিশের লোকসভা ভোটের আগে দলবদল পর্ব রাজ্য রাজনীতিতে চমক দেওয়ার মতো ঘটনা ছিল। একে একে তৃণমূলের বহু নেতা, সাংসদই জোড়াফুল ছেড়ে পদ্মবনে পা রেখেছিলেন। বারাকপুরের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অর্জুন সিংও (Arjun Singh) ছিলেন তাঁদের মধ্যে একজন। সাংসদ পদের টিকিট পেতে বিজেপিতে যোগদানস এবং উনিশের ভোটে লড়ে বারাকপুরের সাংসদ হওয়া। সাজানো চিত্রনাট্যের মতোই ছিল সেসময়। তবে পরবর্তীতে প্রেক্ষাপট বদলেছে। একুশের বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালে অর্জুন সিংয়ের ‘ঘর ওয়াপসি’ ঘটে। ফিরে আসেন তৃণমূলে। আবার এক লোকসভা ভোট আসন্ন। চব্বিশের ভোটের আগে তাঁর মুখে শোনা গেল শুদ্ধিকরণের বার্তা!
শুক্রবার শ্যামনগরের (Shyamnagar) এক জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি বজায় রাখার প্রতি জোর দিলেন। বললেন, ”কোনও নাককাটা, কানকাটা, গালকাটাদের বুথে বসতে দেওয়া যাবে না। তাদের দেখলে লোকে তৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়ে অন্য কাউকে ভোট দেবেন। সভ্য, ভদ্র মা-দিদিদের এবং স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য কিংবা প্রাক্তন কাউন্সিলরদের বুথে বসাতে হবে।”
এই মুহূর্তে দুর্নীতি-কাঁটায় বিদ্ধ দল। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দলগুলি অত্যন্ত সক্রিয়তার সঙ্গে তৃণমূল নেতা, জনপ্রতিনিধিদের বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছে। ধরপাকড়ও চলছে। এসব কাজকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ বলেই বারবার উল্লেখ করছে শাসকদল। আর সেখানে দাঁড়িয়ে অর্জুন সিংয়ের গলায় অন্য সুর। এবং তিনি ‘পাঠ’ দিলেন নিজের দলের কর্মীদেরই। বললেন, ”এজেন্সির সঙ্গে লড়তে গেলে নিজেকে ঠিক রাখা উচিত। বাংলায় মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় (Mamata Banerjee) যা পদক্ষেপ, যা সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটাই সকলের মেনে চলা উচিত। কারণ, বাংলার রাজনীতি মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের চেয়ে ভালো কেউ বোঝেন না, বোঝেন না, বোঝেন না।”
উল্লেখ্য, ভোটযুদ্ধেই হোক কিংবা অন্য যে কোনও বিষয় তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে বিজেপি বারবারই বলে, তৃণমূল দুর্নীতিপরায়ণ দল। বিজেপিতে থাকাকালীন অর্জুনও সেই সুরেই কথা বলতে অভ্যস্ত ছিলেন নিশ্চিত। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মত, এখন তৃণমূলে ফিরে সেই ‘পাঠ’ই তিনি পড়ালেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.