আকাশনীল ভট্টাচার্য, বারাকপুর: আদালতে স্থগিতাদেশ জারির আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে। ভাটপাড়া পুরসভায় আস্থা ভোটে হেরে গেলেন অর্জুন সিং। সোমবার ভোটাভুটিতে অংশ নেন ৩৩ জন কাউন্সিলর। অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন ২২ জন কাউন্সিলর। আর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব সমর্থন করেননি ১১ জন। ফলে আস্থা ভোটে হেরে ভাটপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারিত হলেন একদা তৃণমূল কংগ্রেসের দাপুটে নেতা।
৩৫টি আসন বিশিষ্ট ভাটপাড়া পুরসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল তৃণমূলেরই। শাসকদলের কাউন্সিলর ৩৩ জন আর সিপিএমের ১ জন। একজন কাউন্সিলরের মৃত্যুর পর আপাতত একটি আসন খালি। পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন ভাটাপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিং। কিন্তু, টিকিট না পেয়ে লোকসভা ভোটের মুখে বিজেপিতে যোগ দেন অর্জুন। তাঁর দাবি মেনে বারাকপুর লোকসভা আসনে দলত্যাগীকে বিধায়ককে প্রার্থীও করেছে গেরুয়া শিবিরে। এদিকে খোদ চেয়ারম্যানই দল বদলে ফেলায় ভাটপাড়ায় পুরসভার অচলাবস্থা তৈরি হয়। বারাকপুর শিল্পাঞ্চলে অর্জুন সিংয়ের রাজনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তিও যথেষ্ট। সেক্ষেত্রে পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলরদের মধ্যেও বিভাজনের আশঙ্কা ছিল। অচলাবস্থা কাটাতে গত ১৮ মার্চ বিধানসভায় ভাটপাড়া পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পুর ও নগরোয়ন্নমন্ত্রী ফিরহার হাকিম। বৈঠকে চেয়ারম্যান অর্জুন সিংয়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার সিদ্ধান্ত নেন ২২ জন কাউন্সিলর। নিয়মমাফিক চিঠি পাঠানো হয় বারাকপুরের মহকুমা শাসককে। চুপ করে বসে ছিলেন না অর্জুন সিংও। ভাটাপাড়া পুরসভায় আস্থা ভোটে স্থগিতাদেশ জারির আবেদন করে আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। কলকাতা হাই কোর্টে সেই আবেদন অবশ্য খারিজ হয়ে যায়।
সোমবার ভাটপাড়া পুরসভার অনাস্থা প্রস্তাব সংক্রান্ত সভা ডেকেছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান সোমনাথ তালুক। অশান্তি এড়াতে পুরসভার চত্বরে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। বহিরাগত, এমনকী সাংবাদিকদেরও ঢুকতে দেওয়া হয়নি। জানা গিয়েছে, ৩৫টি আসনে ভাটাপাড়া পুরসভায় আস্থা ভোটে অংশ নেন ৩৩ জন কাউন্সিলর। কাউন্সিলরের মৃত্যুর পর একটি ওয়ার্ডে এখনও উপনির্বাচন হয়নি। আর একজন সিপিএম কাউন্সিলর গরহাজির ছিলেন। ২২-১১ ভোটে হেরে যান চেয়ারম্যান অর্জুন সিং। ভোটের ফল প্রকাশ্যে আসতে ১৪৪ ধারা অগ্রাহ্য করে পুরসভা চত্বরে ঢুকে আনন্দে মেতে ওঠেন তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থকরা। শুরু হয়ে যায় আবির খেলা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.