অর্ণব দাস, বারাকপুর: গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থামাতে এসে তৃণমূল কাউন্সিলরকে ধমক দিয়েছিলেন আইসি। তাঁর সেই ভূমিকার প্রশংসায় পঞ্চমুখ বারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং। প্রশংসা করলেন বিধায়ক রাজ চক্রবর্তীও।
পুলিশের ভূমিকার একটি ভিডিও ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। তাতে খড়দহ থানার আইসি রাজকুমার সরকারকে দেখা গিয়েছে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সোনু সাউকে ধমক দিতে। আইসিকে বলতে শোনা গিয়েছে, “জনপ্রতিনিধি হয়ে যে কাজটি সে করেছে তা গুন্ডারাও করে না। কাউন্সিলর হিসাবে অনেক বেশি দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। দুই জনপ্রতিনিধির রাস্তায় মারামারি করার ঘটনা জনগণ দেখছে।” এর আগেও খড়দহ থানার আইসি ‘খেলা হবে’ দিবসের অনুষ্ঠানে প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে তৃণমূল কাউন্সিলর-সহ কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, “মানুষের জন্য কাজ করুন এবং ভালো মানুষদের সঙ্গে রাখুন। তাহলে মানুষ হিসেবে এবং রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে সুনাম পাবেন। আপনারা সরকারের মুখ। তাই অসামাজিক কাজ করবেন না, তোলাবাজি করবেন না।”
টিটাগড় পুরসভার দুই কাউন্সিলরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দলীয় কর্মী খুন হওয়ার ঘটনায় দলের কাউন্সিলরের ভূমিকার সমালোচনা করলেন স্থানীয় বিধায়ক থেকে সাংসদ সকলে। পাশাপাশি খড়দহ থানার পুলিশের ভূমিকাকেও প্রশংসা করেছেন তারা। সাংসদ অর্জুন সিং বলেন, “আইসি রাজকুমার সরকার একজন অ্যান্টি ক্রিমিনাল অফিসার। এর আগেও উনি প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন। ওঁর মেরুদন্ড সোজা। খুনের ঘটনায় এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। প্রশাসনকে বলব, কোনও রকম চাপে না পরে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে। তাতে মানুষের কাছে দলের প্ৰতি ভালো বার্তা যাবে।” তারকা বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী বলেন, “জনপ্রতিনিধিদের অনেক বেশি সংযত হতে হয়। যারা পারে না তাঁদেরকে মানুষ প্রত্যাখ্যান করে। এরকম কোন স্বার্থ থাকতে পারে না যার জন্য দুই জনপ্রতিনিধি লড়াইয়ে নেমে যাবে। আমি এই ঘটনাকে একদমই সমর্থন করি না। কেউ যদি গণ্ডি পেরিয়ে আইন-শৃঙ্খলা হাতে তুলে নেয় তার বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।” ঘটনার দিন পুলিশ সঠিক ভূমিকায় পালন করেছে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, টিটাগড় পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সোনু সাউ এবং ২২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বিকাশ সিংয়ের অনুগামীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। রবিবার বিকাশ সিংয়ের অনুগামী তৃণমূল কর্মী রৌনক পান্ডের সঙ্গে টিটাগড় পুরানি বাজার এলাকায় গন্ডগোল বাঁধে সোনু সাউয়ের অনুগামীদের। অভিযোগ, রৌনককে তারা ব্যাপক মারধর করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বিকাশ সিংয়ের আরেক অনুগামী আকাশ প্রসাদ। তাঁকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। আহত অবস্থায় আকাশকে উদ্ধার করে খড়দহের বলরাম সেবা মন্দির হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তৃণমূলের দুই কাউন্সিলরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এক দলীয় কর্মীর মৃত্যুর ঘটনা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন টিটাগড় পুরসভার চেয়ারম্যান কমলেশ সাউ। এই ঘটনায় সোমবার দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.