মণিশংকর চৌধুরি: সপ্তাহের শুরু থেকে অশান্তি ফিকে হল না সপ্তাহান্তেও৷ কারণে, অকারণে উত্তপ্ত হয়ে ওঠাই যেন রোজকার ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়ায়৷ বৃহস্পতিবার সকালে সামান্য পতাকা ঘিরে রাজনৈতিক সংঘর্ষ থেকেই ঘটে যায় ২ জনের মৃত্যু৷ সেই মৃত্যু ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হতে বিশেষ দেরি হয়নি৷ তারপর থেকেই কার্যত অগ্নিগর্ভ হয়ে রয়েছে ভাটপাড়া৷ উদ্বেগ ছড়িয়ে গিয়েছে দিল্লি পর্যন্ত৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে এনিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে চিঠি পাঠিয়েছেন৷ জানতে চেয়েছেন পরিস্থিতি৷
শনিবার সেই অশান্ত ভাটপাড়া পরিদর্শনে গেল বিজেপি সংসদীয় প্রতিনিধিদল৷ তাঁদের সফর ঘিরে এদিন সকাল থেকেও পরিস্থিতি কিছুটা উত্তপ্তই ছিল৷ দুপুরে সাংসদ আলুওয়ালিয়ার নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলটি যাওয়ার কিছু আগেই বারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং পৌঁছে যান এলাকায়৷ জনপ্রতিনিধি হিসেবে নিজের খাসতালুকে যাঁকে প্রথম থেকেই অতি সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গিয়েছে৷ ঘটনার দিন থেকেই তিনি অভিযোগ তুলেছিলেন, দু দলের অশান্তি থামাতে গিয়ে পুলিশ যে গুলি চালিয়েছে, তাতেই মৃত্যু হয়েছে দুই বিজেপি সমর্থকের৷ আজ একেবারে তথ্যপ্রমাণ সমেত তা তিনি পেশ করলেন সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে৷
একাধিক রিপোর্ট, ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া গুলির নমুনা দেখিয়ে অর্জুন সিং ফের দাবি করেন, তিনি সমস্ত পরীক্ষা করিয়েছেন৷ তার রিপোর্ট অনুযায়ী, সেদিন ভাটপড়ায় যে গুলি চলেছিল, তা ইনসাস এবং এসএলআরে৷ যা কিনা সাধারণত রাজ্য পুলিশের কাছে থাকে৷ অর্জুনের দাবি, এ থেকেই প্রমাণিত যে ওইদিন ভাটপাড়ায় পুলিশই গুলি চালিয়েছিল এবং তাতেই ২ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ এই নমুনা তাঁর কাছে রয়েছে, অথচ পুলিশ এগুলো বাজেয়াপ্ত করেনি? জবাবে অর্জুন সিং জানান, ‘পুলিশ তো বলছে, গুলি চালানোই হয়নি৷ তাহলে কীভাবে পুলিশ এসব বাজেয়াপ্ত করবে?’
যথাযথ যুক্তি৷ ভাটপাড়ার সাম্প্রতিক অশান্তির নেপথ্যে পুলিশের ভূমিকা বেশ সন্দেহজনক বলে অভিযোগ উঠেছে নানা মহলে৷ এমনকী এলাকাবাসীও কাঠগড়ায় তুলছেন পুলিশকেই, যাদের হাতেই কি না নিরাপত্তার গুরু দায়িত্ব৷ এতদিন তৃণমূলের দাপুটে নেতা, বিধায়ক হয়ে ভাটপাড়াকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন অর্জুন সিং৷ লোকসভা নির্বাচনের আবহে দলের সঙ্গে অশান্তির জেরে দলবদল করে গেরুয়া শিবিরের সাংসদ হয়েও তিনি বোঝালেন, রাজনৈতিক রং বদলেছে মাত্র, এলাকা আসলে তাঁরই৷ তাই অশান্তি নিয়ন্ত্রণেও তাঁর কথাই সর্বাধিক বিবেচিত৷
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.