সুমন করাতি, হুগলি: বৃষ্টির পরিমাণ কম অন্তত ৩০ শতাংশ। কিন্তু বিভিন্ন বাঁধের ছাড়া জলে বন্যার আশঙ্কা হুগলির আরামবাগ (Arambag) মহকুমার বিস্তীর্ণ অংশে। ফুঁসছে মুণ্ডেশ্বরী-সহ একাধিক নদী। খানাকুলের রামমোহন ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার গ্রামগুলিতে জল ঢুকতে শুরু করেছে। আতঙ্কিত বাসিন্দারা। নদীর তীরবর্তী এলাকায় থাকা বেশ কয়েকটি পরিবারকে ইতিমধ্যেই সেকেন্দারপুর বিদ্যালয়ের অস্থায়ী ত্রাণ শিবিরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় প্লাবিত এলাকার পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে স্থানীয়দের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন স্থানীয় তৃণমূল সাংসদ (TMC MP) অপরূপা পোদ্দার। যদিও সাংসদ পালটা এই পরিস্থিতির জন্য ডিভিসিকে দুষেছেন।
কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টি হলেও হুগলিতে এখনও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ তিরিশ শতাংশ কম। তাই জলাশয়গুলো এখনও জলধারণ করতে পারছে। চাষের তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে খবর। তবে ডিভিসির (DVC) ছাড়া জলে নদীগুলো বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। নিচু এলাকায় চাষের জমিতে জল ঢুকেছে খানাকুলের দুটি ব্লকে। হুগলি জেলায় ত্রাণ শিবির (Relief Camps) রয়েছেন ৮০৪ জন। স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ মুখরা আমিন, দিবাকর রায়রা বলছেন, ”বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নদীর জল বাড়ছে। আমরা ঘরবাড়ি ছেড়ে ত্রাণ শিবিরের দিকে যাচ্ছি। যথেষ্ট উদ্বেগজনক পরিস্থিতি।” দিবাকরবাবুর বৃদ্ধাশ্রম রয়েছে। সেসব বয়স্ক লোকজনকে নিয়ে তিনি ত্রাণ শিবিরে উঠে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
এই অবস্থায় প্লাবিত এলাকাগুলি পরিদর্শনে যান আরামবাগের সাংসদ অপরূপা পোদ্দার। তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। প্লাবনের জন্য তিনি পালটা ডিভিসির জল ছাড়াকে দায়ী করেছেন। সকলকে বুঝিয়ে শান্ত করেন। জানান, জেলা প্রশাসনের তরফে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতেই জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরও তৎপর হয়েছে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমা ভুঁইঞা দপ্তরের আধিকারিকদের নিয়ে খানাকুল পরিদর্শন করেন। পরে আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজে বৈঠক করেন।
সিএমওএইচ (CMOH) বলেন, “বন্যার জলে নানা অসুখ হয়। ডায়রিয়া-জ্বরের পাশাপাশি সাপে কাটার ঘটনাও বাড়বে। আগে থেকেই সাব সেন্টারগুলোতে প্যারাসিটামল, ওআরএস মজুত করা হয়েছে। সাপে কাটার জন্য এভিএস (AVS) থাকছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে। আশাকর্মীদের কাছে প্রাথমিক ওষুধ রাখা থাকছে।” চারিদিক প্লাবিত হলে যাতায়াতে সমস্যা হয়। বহুক্ষেত্রে নৌকা করে গন্তব্যে পৌঁছতে হয় স্বাস্থ্যকর্মীদের। সেইসব ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.