স্টাফ রিপোর্টার: দলের মহাসচিব শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সতর্কবার্তার পরেও ফের ফেসবুকে বেলাগাম বোলপুরের তৃণমূল সাংসদ অনুপম হাজরা। দলনেত্রীর নাম ভাঙিয়ে পাল্টা মূল্যবোধ ও আদর্শর প্রশ্ন তুলে মহাসচিবের মন্তব্য নিয়ে তির্যক মন্তব্য করে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফেসবুকে পোস্ট করেন বোলপুরের সাংসদ। দিন কয়েক আগে মহাত্মা গান্ধীকে উদ্দেশ্য করে অত্যন্ত ‘কদর্য’ ভাষা ব্যবহার করে আক্রমণ করেন অনুপম। তাই নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘অনুপমের মন্তব্য দল অনুমোদন করে না।’ এরপরই এদিন ফের বিতর্কিত পোস্ট। এই ঘটনার জেরে অনুপম হাজরাকে শো-কজ করেছে তৃণমূল। আগামী ২ মার্চের মধ্যে তাঁর জবাব তলব করেছেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই পরবর্তী পদক্ষেপ করবে দল।
বীরভূমে দলের সঙ্গে কোনওরকম সম্পর্ক না রাখার পাশাপাশি ক্রমাগত দলবিরোধী মন্তব্য করার পর এদিন মহাসচিবের মন্তব্য নিয়ে প্রকাশ্যে তির্যক মন্তব্য করার অনুপমের বিরুদ্ধে ভয়ানক ক্ষুব্ধ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। অবিলম্বে বোলপুরের সাংসদকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবিও করেছেন রাজ্য নেতৃত্বের অধিকাংশ নেতাই। তৃণমূল ভবনের এক শীর্ষ নেতৃত্বের দাবি, মহাসচিবের মন্তব্য নিয়ে এদিন পাল্টা তির্যক মন্তব্য ঘেরা ফেসবুক পোস্ট করে দল থেকে কার্যত বহিষ্কারের রাস্তা পাকা করে ফেলেন অনুপম। এই ঘটনার মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগে বিধানসভা ভবনে ফেসবুকে অনুপমের লাগাতার দলবিরোধী মন্তব্য নিয়ে মহাসচিব জানিয়েছিলেন, “অনুপমের মন্তব্যে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এমন মন্তব্য করার আগে দল ছেড়ে দিন। যিনি দলের ভাবমূতি নষ্ট করেন, তিনি কখনও দলের কেউ হতে পারেন না।”
এখানেই শেষ নয়, কড়া ব্যবস্থা গ্রহনের ইঙ্গিত দিয়ে পার্থবাবু জানিয়েছিলেন, “আগামী মাসের ৯ তারিখ দলের কোর কমিটির বৈঠক রয়েছে। সেখানে অনুপম হাজরার দলবিরোধী মন্তব্যের বিষয়টি আমি নিজেই তুলে ধরব।” এরপর এদিন ফের অনুপম নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করে তৃণমূলনেত্রীর নাম ব্যবহার করে দীর্ঘ ফেসবুক পোস্ট করেন। দাবি করেন, তিনি দলের জন্মদাত্রীর ন্যায়-নীতি-আদর্শকে অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলছেন। প্রশ্ন উঠেছে, “যদি সত্যি তাই হয় তবে বিগত পঞ্চায়েত, পুরসভা বা বিধানসভা ভোটে কেন কোনও প্রার্থীর হয়ে প্রচারে নামলেন না? কেন দলের জেলার কোনও কর্মসূচিতে তিনি অংশ নেন না? কেন সাংসদ কোটার টাকা খরচে জেলার জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেন না।?” নয়া ফেসবুক পোস্টে অনুপম বলেন, “সাংসদ হিসাবে শপথ নেওয়ার দিনে মানসিক ভাবে আরেকটা শপথও নিয়েছিলাম তা হল, দিদিভাই এর সততা আর মূল্যবোধের আদর্শকে অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলার। আজ পর্যন্ত তা পালন করে আসছি এবং ভবিষ্যতেও করব। কিন্তু একজন বাঙালি হিসাবে নেতাজিকে মিস্টার গান্ধীর তুলনায় শ্রেষ্ট মানায়, হঠাৎ করে দল বিরোধী আখ্যা পেলাম। সঙ্গে পেলাম যথেষ্ট মানসিক যন্ত্রনা।”
দেখুন সেই ফেসবুক পোস্ট:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.