পলাশ পাত্র, তেহট্ট: “মানুষকে ভালবাসুন। অযথা চোখ রাঙানো বন্ধ করুন।” পঞ্চায়েত স্তরের নেতাদের এভাবেই উপদেশ দিলেন বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। লোকসভার আগে নদিয়ার বিশেষ দায়িত্ব পেয়ে রবিবার কৃষ্ণনগরে জনসভা করেন অনুব্রত। বিরোধীদের উদ্দেশে ‘চড়াম চড়াম’, ‘পাচন’-র মতো বিতর্কিত মন্তব্যের পর এবারের নির্বাচনের আগে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কথা শোনা গেল তাঁর গলায়। কৃষ্ণনগরের সভা থেকে জেলার নেতাদের বললেন, “মানুষকে ভালবাসবেন। বিরক্ত হবেন না। বামফ্রন্ট যা করেছে, আমরা সেটা করব না।”
রবিবার কৃষ্ণনগরে প্রকাশ্য সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, “যাঁরা এখানে পঞ্চায়েত প্রধান আছেন, তাঁদের বলছি। মানুষকে বসতে বলবেন। বিরক্ত হবেন না। লাল চোখ দেখাবেন না। মানুষকে ভালোবাসবেন। মানুষ আপনাকে সম্মান দেবে। বলবে, প্রধান সাহেবের কাছে গিয়েছিলাম। একটা কাজ নিয়ে। কাজটা করতে পারেননি। কিন্তু ভালবেসে এক কাপ চা খাইয়েছেন। সেই নামটা করবে। বামফ্রন্ট যা করেছে, আমরা তা করব না।” একইসঙ্গে চৈতন্যর জন্মভূমিতে দাঁড়িয়ে নদিয়ায় পাচনের তত্ত্বও যে কাজে লাগবে, সে বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে মতপ্রকাশ করলেন এই নেতা। বিষয়টি খোলসা করে দিতে গিয়ে বারেবারে তিনি বলেন, “ওই তো বললাম ১০০-র মধ্যে ৯০ জন মানুষ তৃণমূলের সঙ্গে আছে। পাচন ছাড়া ভোট হয় নাকি! পাচন, চড়াম চড়াম আছেই। সামনে উর্বর জমি চাষ করতে পাচনের আঘাত লাগে। ভয় পাবেন না। বেমক্কা পাচনের বাড়ি দেবেন। জমির ভাল, উর্বর হবে।” পাচনের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন, “জমির মাটি ভাল না হলে ফসল ভাল হবে না। তাই পাচনের দরকার।” এদিন ফের একবার উন্নয়ন নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষের জবাব দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “বিরোধীদের চোখে ছানি পড়েছে। তা কাটাতে হবে। ওরা উন্নয়ন দেখতে পায় না। বাইরের দরজায় দাঁড়ালেই উন্নয়ন দেখা যায়। আদিবাসী, সংখ্যালঘু, প্রান্তিক মানুষ, শ্রমিকদের উন্নয়ন চোখে পড়ে। ওদের পড়ে না।”
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও আক্রমণ করেন অনুব্রত। তিনি বলেন, “মোদিবাবু কাকে কাকে নিয়ে এলেন? রাজনাথ সিং, স্মৃতি ইরানি আর ভয়ংকর মুখ্যমন্ত্রী যোগীও আসছেন। দু’হাজার সংখ্যালঘুকে এনকাউন্টার করেছে। আল্লা বিচার করবেন। ঈশ্বর বিচার করবেন। রাজ্যবাসীর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কন্যাশ্রী সহ একাধিক উন্নয়নমূলক কাজের পরিসংখ্যানও তিনি দেন। এদিন তিনি বলেন, “অন্য কাউকে ভোট দিয়ে ভোট নষ্ট করবেন না। আপনাদের ঘরের মেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোট দিন।” এদিন কৃষ্ণনগরের সভায় উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, বিধায়ক গৌরী দত্ত, শংকর সিং কল্লোল খাঁ, মহুয়া মৈত্র, হাসানুজ্জামানরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.