নন্দন দত্ত, সিউড়ি: ‘আমি যেমন কিছু দেব। তেমন কিছু নেব।’ দুবরাজপুরের কর্মিসভায় একথা দলের কর্মীদের জানালেন তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। কারণ, কর্মী সভায় বুথ সভাপতিরা জানালেন হেতমপুর, যশপুর এলাকায় বিধানসভা নির্বাচনে রাস্তা, সেতুর যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তা আদৌ হয়নি। জেলা সভাপতির সামনে এমন প্রশ্ন করায় প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন দুবরাজপুর ব্লক সভাপতি ভোলা মিত্র। পাশাপাশি, হেতমপুরে দলের চারটি বুথে যে দলীয় কোন্দল আছে সে কথা প্রকাশ্যেই স্বীকার করেন জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সমস্যা মেটাতে চারটি বুথ দেখার বাড়তি দায়িত্ব দেন ব্লক সভাপতিকে।
লোকসভা নির্বাচন জিততে কর্মী বৈঠকে এলাকার পরিস্থিতি নিজের চোখে দেখলেন জেলা সভাপতি। দুবরাজপুরে ১০টি ব্লকের মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে বালিজুড়ি নিয়ে আলোচনাই করল না জেলা নেতৃত্ব। হেতমপুরে ১৭টি বুথের মধ্যে ৫টিতে হেরে আছে তৃণমূল। যার মধ্যে চারটিতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে। অনুব্রত বললেন, ‘পুরনোদের দলে সম্মান দিয়ে ডাকুন। তাদের সঙ্গে আলোচনা করুন।’ বুথ সভাপতিরা জানান, দলের কোন্দল মেটাতে অঞ্চল সভাপতির বাইরে অন্য কাউকে দায়িত্ব দিন। সঙ্গে সঙ্গে ভোলা মিত্রকে চারটি বুথ দেখার দায়িত্ব দেন। বুথ সভাপতি জানান, বিধানসভা নির্বাচনের সময় দরবেশডাঙা থেকে ধরমডাঙা পর্যন্ত চার কিলোমিটার রাস্তা ও শাল নদীর ওপর একটা কজওয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। আজ পর্যন্ত তা হয়নি। একইভাবে দুবরাজপুর থেকে কেন্দুলি হয়ে মানসায়র পর্যন্ত রাস্তা চলাচলের অযোগ্য। কোনও চালক ওই পথে যেতে চান না। অভিযোগ শুনেই রুষ্ট হন ব্লক সভাপতি ভোলা মিত্র। তবে অনুব্রত বলেন, ‘এখন টেন্ডার করার সময় নেই। না হলে করে দিতাম। ভোটের পর করে দেব।’ তারপরেই প্রশ্ন করেন, ‘শুধু হাতে তো কিছু দেব না। আমি যেমন দেব।’ তেমন নেব।’ বুথ সভাপতি সঙ্গে সঙ্গে জানান, ‘আমরা ২৯৪ ভোটে লিড দিয়েছিলাম। রাস্তা হলে ৫০০ ভোটে লিড দেব।
এরপরেই যশপুর অঞ্চলের করকপুর থেকে অভিযোগ পানীয় জলের। সাংসদ থেকে বিধায়কদের বলেও কিছু হয়নি। চারটি সাব মার্সিবল দেওয়ার কথা শুনেছি। কিন্তু তাতে হবে না।’ একথা শুনে ভোলা মিত্র বলে ওঠেন, ‘আমি তো বলেছি করে দেব। তা কেষ্টদাকে বলার কি আছে।’ অনুব্রত ওরফে কেষ্টবাবু বলেন, ‘আরও তিনটি সাব মার্সিবল দিলে হবে তো। গ্রামবাসীরা তার প্রতিশ্রুতিতেই খুশি।’ তবে এদিন অনুব্রত কর্মীদের বলেন, ‘বিজেপি বলে দাঙ্গাবাজ, মিথ্যাবাদীর একটা দল আছে। তাদের কথায় বিভ্রান্ত হবেন না। মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের কথা এলাকায় এলাকায় গিয়ে বলুন। তাতেই ভোটের ব্যবধান অনেক বাড়বে।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.