সৌরভ মাজি, বর্ধমান: ফের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হল রোগী। এনিয়ে এক সপ্তাহের ব্যবধানে পরপর দু’টি ঘটনা ঘটল। স্বাভাবিকভাবেই হাসপাতালের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি মেমারির পাল্লারোড এলাকা থেকে এক ভবঘুরে অসুস্থ ব্যক্তিকে উদ্ধার করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁকে বড়শুল স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান তাঁরা। সেখানে তাঁকে ভর্তি করা হয়। ওই ব্যক্তি তখন নিজের নাম জানিয়েছিলেন বিমল কুণ্ডু। কিন্তু ঠিকানা বা পরিবারের কারও সম্পর্কে কিছুই জানাতে পারেননি। বড়শুল থেকে বিমলবাবুকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। পাল্লারোডের পল্লীমঙ্গল সমিতির সদস্যরা ওই ব্যক্তিকে সেখানে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করান। বর্ধমান মেডিক্যালের রাধারানি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় তাঁকে। পরদিন গিয়ে ওই ক্লাবের সদস্যরা আর ওই ব্যক্তিকে বেডে দেখতে পাননি। হাসপাতালে কর্মীদের কাছে জানতে চাইলেও তাঁরাও কিছু জানাতে পারেননি।
ক্লাবের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কিন্তু হাসপাতাল বা বাইরেও কোনও সন্ধান পাননি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কিছুই জানতে পারেননি তাঁরা। মঙ্গলবার ফের ক্লাবের সদস্যরা হাসপাতালে যান। কিন্তু কোনো সদুত্তর পাননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে। সন্ধানও পাননি ওই রোগীর। এরপর পল্লীমঙ্গল সমিতির তরফে ঘটনার বিষয়ে বর্ধমানে জেলা শাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয় ঘটনার বিষয়ে। সমিতির সাধারণ সন্দীপন সরকার জানিয়েছেন, রোগী ঠিকভাবে হাঁটাচলা করতে পারে না। তার হাতে ওষুধ দেওয়ার চ্যানেল করা ছিল। সেই অবস্থায় একজন রোগী হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হয়ে গেল তাও কেউ টের পেল না। এটা বিস্ময়ের। তাঁর কথায়, রাজ্য সরকার প্রতিটি হাসপাতালে প্রচুর সংখ্যায় নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করেছে। প্রচুর সংখ্যায় সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে নজরদারিতে। তার পরেও রোগী হাসপাতালের বেড থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে কিন্তু কেউই টের পাচ্ছেন না। এটা সত্যিই অবাক করা কাণ্ড।
গত সপ্তাহেও মেমারির সাতগাছিয়া এলাকার এক রোগী একইভাবে নিখোঁজ হয়েছিলেন। পরিবারের লোকজন হন্যে হয়ে খোঁজ করছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিসি ক্যামেরার ফুটেজও তাঁদের দেখাতে না পারায়। যদিও তিন দিন পরে তাঁর সন্ধান মিলেছিল। বর্ধমান শহরেরই রাস্তায় ঘুরছিলেন তিনি। মানসিকভাবে কিছুটা অসুস্থ থাকায় তিনি নিজেই বেরিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, রোগী হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে গেলেও কেউ টের পাচ্ছেন না কেন। গেটে নিরাপত্তা রক্ষীরা থাকেন। প্রতিটি ওয়ার্ডের বাইরে-পথে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। যা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মনিটরিং করার কথা। তা সত্ত্বেও এক সপ্তাহের ব্যবধানে এমন ঘটনায় প্রশ্নের মুখে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা ব্যবস্থা। হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিন্টেন্ডেন্ট কাম ভাইস প্রিন্সিপ্যাল প্রবীর সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, ঘটনার বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.