চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল : ফের শিল্পতালুকে মন্ত্রী বনাম মেয়রের লড়াই। মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির ‘পৌরুষ’ নিয়ে নজরবিহীন কটাক্ষ মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র। আসন্ন লোকসভায় আসানসোল কেন্দ্র থেকে সম্ভাব্য তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে উঠে আসছে সেখানকার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির নাম। যাঁর সঙ্গে আগে অনেকবারই বাকযুদ্ধে জড়িয়েছেন বর্তমান সাংসদ তথা মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। এবার নির্বাচনী লড়াইয়ের ময়দানে সেই মেয়রের মুখোমুখি হওয়ার ইঙ্গিত পেয়ে রীতিমতো অশালীন ভাষায় আক্রমণের অভিযোগ উঠল বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে। রবিবার আসানসোলে গিয়ে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘ভোটে দাঁড়াতে হলে, ‘মর্দ’ হওয়া দরকার। আমি লেখাপড়া জানা শিক্ষিত, সভ্য মানুষ। জঘন্য রাজনীতির পথে হাঁটতে পারব না।’’ মন্ত্রীর আরও দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে যিনিই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুন না কেন, তিনি ভয় পান না।
বিনা অনুমতিতে বৃক্ষনিধনে বিতর্ক, তড়িঘড়ি বন্ধ করল সেচ দপ্তর
২০১৪-এ ভোটে জিতে আসানসোলের বিজেপি সাংসদ হয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়। পেয়েছেন মন্ত্রিত্বও। বছর খানেক পর পুর নির্বাচনে জিতে আসানসোলের মেয়র পদে বসেছেন তৃণমূলের একনিষ্ঠ, ভরসাযোগ্য কর্মী জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তারপর থেকে নানা ইস্যুতে দুই জনপ্রতিনিধির মধ্যে ঠাণ্ডা লড়াই চলছেই। এবার তাতে নতুন বিতর্ক। মন্ত্রীর এমন বেনজির কটাক্ষকে ব্যক্তিগতভাবে গুরুত্ব না দিলেও, সুকৌশলে বাবুল সুপ্রিয়র শব্দবাণে তাঁকেই ঘায়েল করেছেন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তাঁর পালটা বক্তব্য, ‘ভোটে দাঁড়ানোর জন্য মর্দ বা পুরুষেরই যদি প্রয়োজন, তাহলে বাবুল হয়তো আমার উদ্দেশে একথা বলেননি। বলেছেন স্মৃতি ইরানি, সুষমা স্বরাজ, উমা ভারতীদের উদ্দেশে। হয়তো বলতে চেয়েছেন যে মহিলারা নন, পুরুষরাই সাংসদ পদে উপযুক্ত। এর জবাব জিতে পারবেন বিজেপির মহিলা সাংসদরাই।’ এতে বিতর্ক আরও উসকে উঠেছে।
‘মাঠ’ টানাটানি, অনিশ্চয়তায় প্রধানমন্ত্রীর ঠাকুরনগরের সভা
রবিবার আসানসোলের ডুরান্ড হলে প্রধানমন্ত্রীর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের লাইভ সম্প্রচার করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে রেলকর্মী ডিআরএম ও পড়ুয়াদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। ওই অনুষ্ঠান শেষে দুর্গাপুরে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি প্রধামন্ত্রীর সভা প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। রাজ্যে প্রধানমন্ত্রীর সভা নিয়ে বারবার অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় প্রশাসনের উদ্দেশে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘প্রধানমন্ত্রীর সভা আটকানো যায় না। কারও ক্ষমতা নেই বাংলার বুকে মোদিজির সভা আটকে দেবে।’ প্রসঙ্গত, লোকসভার প্রচারে এরাজ্যে একাধিক সভা করার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সেই কর্মসূচি স্থির করে ফেললেও, কোনও না কোনও কারণে বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে জনসভা। সভাস্থল নিয়ে দেখা দিচ্ছে জটিলতা। ফলে বঙ্গভূমিতে প্রধানমন্ত্রীর সভা এখনও পর্যন্ত শুরুই হতে পারেনি। আর তার জন্য এদিন রাজ্য প্রশাসনকেই দায়ী করে গেলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.