পলাশ পাত্র, তেহট্ট: অভাবের সংসারে একটু একটু করে স্বাচ্ছন্দ্য ফিরছিল। ছেলের বিয়ে দেওয়ারও তোড়জোড় শুরু করেছিলেন পরিবারের লোকেরা। কিন্তু কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হানায় সব শেষ। শহিদ হলেন নদিয়ার পলাশিপাড়ার সুদীপ বিশ্বাস। শোকের কার্যত বাকরুদ্ধ বাড়ির লোক ও পাড়া প্রতিবেশীরা।
[ কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় শহিদ হাওড়ার জওয়ান, বাড়ি ফিরছে কফিনবন্দি দেহ]
পলাশিপাড়া থানার হাঁসপুখুরিয়ায় তিলিপাড়ার বাসিন্দা সুদীপ বিশ্বাস। সুদীপরা এক ভাই ও এক বোন। বাবা সন্ন্যাসী বিশ্বাস সামান্য চাষাবাদ করেন। অভাবের সংসার। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বছর চারেক আগে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন সুদীপ। তাঁর রোজগারে পরিবারের হাল ফিরছিল। চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর গ্রামে নিজেদের পাকা বাড়ি তৈরির কাজ হাত দিয়েছিলেন সুদীপ। একমাত্র বোনের বিয়েও দিয়েছিলেন।
সিআরপিএফের অভিশপ্ত ৫৪ নম্বর ব্যাটেলিয়নের কর্মরত ছিলেন নদিয়ার সুদীপ বিশ্বাস। পোস্টিং ছিল কাশ্মীরের পুলওয়ামায়। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, জানুয়ারি মাসে গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন সুদীপ। ছিলেনও বেশ কয়েকদিন। ছুটিতে কাটিয়ে যখন ফের কর্মস্থলে ফিরে যান সুদীপ, তখনও পরিবারের লোকেরা টেরও পাননি যে, ছেলে আর ফিরবে না। বরং পরেরবার ছুটিতে এলে সুদীপকে বিয়ের পিঁড়িতে বসানোর পরিকল্পনায় মশগুল ছিলেন তাঁরা। শুক্রবার সকালে ছেলের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন সুদীপ বিশ্বাসের পরিবারের লোকেরা। এতবড় আঘাতে জন্য যে প্রস্তুত ছিলেন না একেবারেই!বৃহস্পতিবার সকালে সহকর্মীদের সঙ্গে কনভয়ে চেপে পুলওয়ামার টহলদারিতে বেরিয়েছিলেন সুদীপও। জম্মু-শ্রীনগরে হাইওয়েতে আইইডি বোঝাই গাড়ি নিয়ে কনভয়ে আত্মঘাতী হামলা চালায় জঙ্গিরা। ৪৩ জন সহকর্মীর সঙ্গে শহিদ হয়েছেন এই বাঙালি জওয়ানও। শুক্রবার সকালে সেনা হাসাপাতাল থেকে ফোন পান নিহতের ভগ্নীপতি। কান্নার রোল ওঠে বাড়িতে।
[গত দু’দশকে যে সব ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলা কাঁপিয়ে দিয়েছিল ভারতকে]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.