মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, SIT গঠন, তদন্তের কাজে সরেজমিনে নামা – ছাত্রনেতা আনিস খান (Anis Khan) হত্যাকাণ্ডের কয়েকঘণ্টার মধ্যেই পুলিশের চূড়ান্ত সক্রিয়তা দেখা গেল। আর তার জেরেই আমতা থানার তিন পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড (Suspend) করা হল। হাওড়া (গ্রামীণ) পুলিশের সুপার (SP) সৌম্য রায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে খবর। মঙ্গলবার সকালেই সাসপেনশনের খবর প্রকাশ্যে এসেছে। সাসপেন্ড হওয়া তিন পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে দ্রুত বিভাগীয় তদন্ত শুরু হতে পারে বলে খবর। অন্যদিকে, আমতা থানার ওসি দেবব্রত চক্রবর্তী ও সেকেন্ড অফিসার প্রীতম ভৌমিককে আজ ভবানীভবনে তলব করেছে সিট। ওইদিনের ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নেওয়া হতে পারে তাঁদের কাছ থেকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, আমতা থানার এএসআই (ASI), কনস্টেবল ও এক হোমগার্ডকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। ঘটনার রাতে আনিসের পরিবারের তরফে থানায় গোটা বিষয়টি জানানোর পর যে তৎপরতা প্রত্যাশিত ছিল, তা দেখাননি পুলিশকর্মীরা। তাকে গাফিলতির শামিল বলেই ধরে নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের রিপোর্টের ভিত্তিতে এসপি নিজেই তাঁদের সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে খবর। এএসআই নির্মল দাস, কনস্টেবল জিতেন্দ্র হেমব্রম, হোমগার্ড কাশীনাথ বেরা – এই তিনজনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সূত্রের আরও খবর, এই তিনজনই সেদিন রাতে আনিসের বাড়ি গিয়েছিলেন। যদিও এসপি সৌম্য রায় জানালেন, ”জনস্বার্থে নিরপেক্ষ তদন্তের কারণে আমরা তিনজনকে সাসপেন্ড করেছি।” পুলিশের এই পদক্ষেপে নিজেদের ভূমিকা নিয়েই বড়সড় প্রশ্ন উঠে গেল এদিন।
সোমবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন। সন্ধের মধ্যেই তা তৈরির কথা সাংবাদিক সম্মেলনে জানান রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্য। এডিজি, সিআইডি জ্ঞানবন্ত সিংয়ের বাকি দুই সদস্য হলেন সিআইডির ডিআইজি (অপারেশন) মিরাজ খালিদ এবং বারাকপুর কমিশনারেটের যুগ্ম কমিশনার ধ্রুবজ্যোতি দে। আর রাতেই সিটের সদস্যরা পৌঁছে গেলেন হাওড়ার আমতা থানায়। এই এলাকাতেই পুলিশের পোশাকে বাড়িতে হানা দিয়ে আনিস খানকে ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে খুনের অভিযোগে উত্তাল গোটা রাজ্য।
জানা গিয়েছে, আনিস খান হত্যাকাণ্ডের মতো স্পর্শকাতর ঘটনার তদন্তে একটুও গাফিলতি করতে চাইছে না সিট। তাই দায়িত্ব হাতে পেয়ে সোমবার রাত ১০টা নাগাদ আমতা থানায় পৌঁছন মিরাজ খালিদ ও ধ্রুবজ্যোতি দে। তাঁরা প্রায় আড়াইটে পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন, ঘটনার দিন নানা তথ্য সংগ্রহ করেন। মঙ্গলবার সেখানে যাওয়ার কথা সিটের প্রধান এডিজি, সিআইডি জ্ঞানবন্ত সিংয়ের। তবে এদিন সকালে আমতা থানার ৩ পুলিশ কর্মীকে সাসপেনশনের ঘটনায় পুলিশের প্রতি সন্দেহ আরও দৃঢ় হচ্ছে। জানা গিয়েছে, ওইদিন রাতে আমতা থানার ডিউটিতে ছিলেন এই তিনজন। তবে কি তাঁরাই আনিসের বাড়িতে গিয়েছিলেন? এই প্রশ্নও কিন্তু উঠে আসছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.