পলাশ পাত্র, তেহট্ট: দেরি করে হলেও একদফা প্রার্থীতালিকা প্রকাশিত হয়েছে৷ প্রচারে অনেকটা পিছিয়ে থাকা বিজেপি এখন তা সামাল দিতে প্রায় ঘোড়দৌড় শুরু করেছে৷ তারই মধ্যে কাঁটা প্রার্থী নিয়ে বিক্ষোভ৷ প্রায় সর্বত্রই এনিয়ে বিক্ষোভ একেবারে প্রকাশ্যে৷ তারই আরেক ছবি দেখা গেল কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে৷ দেওয়ালে দেওয়ালে বিজেপির প্রতীক থাকলেও নেই প্রার্থীর নাম। কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে কল্যাণ চৌবের নাম ঘোষণার পর ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও দেওয়াল লিখনে নাম নেই৷
কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থীর দৌড়ে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে ছিলেন বর্ষীয়ান সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়, তিনি জলুবাবু নামে রাজনৈতিক মহলে অধিক পরিচিত৷ তাঁর বদলে প্রার্থী করা হয়েছে কল্যাণ চৌবেকে৷ ফলে কর্মী, সমর্থকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক ক্ষোভ। শুক্রবার বিজেপির জেলা সভাপতির সামনেও বিক্ষোভের বহিঃপ্রকাশও ঘটেছে। এসব মেটাতে এরই মধ্যে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় দলের সিদ্ধান্তকে মেনে চলার বার্তা দিয়েছেন সবাইকে৷ একইসঙ্গে তিনি জানান, দলের দরকারে তিনিও প্রার্থীর হয়ে প্রচার করবেন। আসলে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির নেতা, কর্মীরা জলুবাবুর প্রার্থী হওয়া নিয়ে নিশ্চিন্ত ছিলেন৷ বিজেপির জেলা সভাপতি মহাদেব সরকার স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, দলের নেতা-কর্মীরা দিল্লির লড়াইয়ে জলুবাবুকেই চাইছেন। তাঁর নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিজেপি প্রার্থীর নাম ঘোষণা হতেই তাঁদের সেই আশাভঙ্গ হয়েছে৷ এই কেন্দ্রে পদ্মফুলের প্রতীকে লড়ছেন ফুটবলার কল্যাণ চৌবের নাম। শুরু হয়ে যায় ক্ষোভ। সেই ক্ষোভের রেশ ছড়িয়ে পড়ে সীমান্ত এলাকা তেহট্ট থেকে কৃষ্ণনগরে। দেখা যায়, দেওয়ালে পদ্মের প্রতীক আঁকা হয়েছে, লেখা হয়েছে দলের নাম৷ কিন্তু প্রার্থীর নামের জায়গাটি ফাঁকা৷ প্রার্থীর নাম লেখা হয়নি।
বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য গণেশ রায় বলেন, ‘জেলায় কর্মীরা জলুবাবুকে চাইছেন। আমাদের এলাকাতেও কর্মীরা প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। যাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে, তাঁকে কেউ চেনে না। কর্মীদের নিয়ে আমরা তাই জুলুবাবুকে প্রার্থী করার জন্য জেলা সভাপতির কাছে গিয়ে দাবি জানিয়েছি।’ কর্মীরা ক্ষোভ দেখাচ্ছেন। একাধিক নেতা এই ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন। ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন জেলা সভাপতি মহাদেব সরকার। তিনি বলেন, ‘দলের কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলব। তবে দলের সিদ্ধান্তও মানতে হবে।’ এই ক্ষোভ-বিক্ষোভ যাঁকে কেন্দ্র করে, সেই প্রবীণ নেতা জলুবাবুর স্পষ্ট মত, ‘পার্টি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটাকে মান্যতা দেওয়া উচিত। তাতে আমাদের ব্যক্তিগত ক্ষোভ থাকতে পারে। সেটাকে প্রাধান্য না দিয়ে দল যা ঠিক করেছে, সেটাই করা উচিত। সবাই তো সমান নয়।’ আপাতত তাঁর বয়স ৮৭ বছর৷ এই অবস্থায় দলের প্রচারে তিনি সক্রিয়ভাবে থাকতে পারবেন কি? এই প্রশ্ন উঠতেই দলের প্রতি দায়বদ্ধতা দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘দলের দরকারে নামব। রাজনীতির ক্ষেত্রে দলের কাজই আসল৷’ তাঁর এই বার্তায় কি মিটবে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব? সাদা দেওয়াল ভরবে প্রার্থীর নামে? সময় কিন্তু খুব কম৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.