ছবি: প্রতীকী
ধীমান রায়, কাটোয়া: কথায় বলে, রাখে হরি তো মারে কে! না হলে কি আর মায়ের গর্ভ থেকে ছিটকে পড়েও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়তে পারে মাত্র ন’মাসের একটি ভ্রূণ! সোমবার সকালে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনার সাক্ষী রইল পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার বন্দর গ্রামের বাসিন্দারা। ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাইক নিয়ে রাস্তায় পড়ে যান স্বামী-স্ত্রী। সঙ্গে সঙ্গে লরির চাকায় পিষ্ট হন অন্তঃসত্ত্বা মহিলা। গর্ভ থেকে ছিটকে পড়ে ভ্রূণটি। ঘটনাস্থলেই মহিলার মৃত্যু হলেও আশ্চর্যজনকভাবে বেঁচে যায় ছোট্টো প্রাণটি।
কেতুগ্রামের আমগড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা মৃদুল শেখ এদিন বাইকে চাপিয়ে স্ত্রী সাবিরা বেগমকে কাটোয়া শহরে ডাক্তারি চেকআপের জন্য নিয়ে আসছিলেন। তখনই বন্দর বাসস্ট্যান্ডের কাছাকাছি দুর্ঘটনাটি ঘটে। মিঠুনের দাবি, একটি লরি তার গা ঘেঁষে পাশ কাটাতে যায়। সেই সময় লরির সঙ্গে বাইকের ধাক্কা লাগে। নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পেরে বাইকসহ উলটে যান দুজনেই। মিঠুন রক্ষা পেলেও তাঁর স্ত্রীর বুকের উপর দিয়ে লরির চাকা চলে যায়। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, লরির চাকার চাপে সাবিরার গর্ভস্থ সন্তান ছিটকে বেরিয়ে আসে। গর্ভস্থলী-সহ রাস্তায় রক্তমাখা অবস্থায় ছিটকে পড়ে রাস্তার উপর। সাবিরা প্রায় সঙ্গে সঙ্গে মারা গেলেও বেশকিছুক্ষণ বেঁচে ছিল তাঁর সন্তান।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত সকলে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ওই ভ্রূণটিকে উদ্ধার করা হাসপাতালে পাঠায়। চিকিৎসকরা সাবিরাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃত বধূর দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। ঘাতক লরি আটক করেছে পুলিশ। চালক পলাতক। এদিকে ভ্রূণটির অবস্থা সংকটজনক ছিল। প্রায় চার ঘণ্টা পরে তারও মৃত্যু হয়। জানা গিয়েছে, দেড়বছর আগে ব্যবসায়ী মিঠুনের সঙ্গে মুর্শিদাবাদ জেলার সালারের মেয়ে সাবিরার বিয়ে হয়। এটিই ছিল সাবিরার প্রথম সন্তান। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.