ধীমান রায়, কাটোয়া: শিবরাত্রির দিন ষাঁড়ের তাণ্ডব। কখনও মহিলাকে গুঁতিয়ে দিচ্ছে তো কখনও আবার বাইকে ধাক্কা মারছে। তিন বছরের পরিচিত ‘গব্বর’-এর এহেন ব্যবহারে হতচকিত কাটোয়া শহরের বাসিন্দারা। শেষপর্যন্ত শুক্রবার দুপুরেই রাস্তায় পড়ে ছটফট করতে করতে মারা যায় সে। মনে করা হচ্ছে বিষক্রিয়া মৃত্যু হয়েছে তার। স্বাভাবিকভাবেই প্রিয় গব্বরের মৃত্যুতে শোকাহত এলাকার বাসিন্দারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া শহরে প্রায় তিনবছর ধরে মালিকবিহীন এই ষাঁড়টিকে দেখা যায়। মোটাসোটা চেহারা ও চালচলনের জন্য স্থানীয়রা আদর করে নাম রাখেন ‘গব্বর’। কাটোয়া বিদ্যাসাগরপল্লিতেই বেশি ষাঁড়টিকে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যেত। এমনিতেই শান্তশিষ্ট স্বভাবের। কাউকে কোনওদিন আক্রমণও করেনি। সকাল হলেই কাটোয়া শহরের বিদ্যাসাগরপল্লির সুফল সরদারের চায়ের দোকানে এসে ‘গব্বর’ মাথা নাড়ত। তখন এক টুকরো কেক বাড়িয়ে দিতেন দোকানমালিক। গব্বর সেটি গলাধঃকরণ করে পাশেই বাবুদার চায়ের দোকানে হাজির হত। সেখানেও একটি পাউরুটি আদায় করে মনের সুখে হেলতে-দুলতে রাস্তা দিয়ে চলে যেত। তারপর যেখানে যা জুটত তাই দিয়ে দিব্যি দিন কেটে যায়। গব্বরের এই রোজনামচা প্রায় তিন বছর ধরে দেখে আসছিলেন কাটোয়াবাসী। কিন্তু হঠাৎ শিবরাত্রির দিনেই ঘটল অঘটন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এদিন দুপুর একটা নাগাদ হঠাৎ অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে গব্বর। যাকে-তাকে তাড়া করতে থাকে। আভা বিশ্বাস নামে এক মহিলাকে ঘুঁতো মেরে ফেলে দেয়। আভাদেবীর মাথায় চারটি সেলাই দিতে হয়েছে। বাইক উলটে দেয়। আরও কয়েকজনকে তেড়ে যায়। তারপরেই নিস্তেজ হতে শুরু করে গব্বর।
স্থানীয় বাসিন্দা শঙ্করপ্রসাদ ঠাকুর বলেন, “আমার বাড়ির সামনে দিয়ে দুপুর দেড়টা নাগাদ যথন যাচ্ছিল তখন দেখি উলটে পড়ে গেল। তারপর একবার উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতেই ফের পড়ে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই পেট ফুলে যায়। মুখ দিতে গাঁজলা বের হতে হতে মারা গেল।মনে হয় কেউ বিষ খাইয়ে দিয়েছে।” পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে কাটোয়া পুরসভা থেকে দেহটি তুলে নিয়ে গিয়ে সৎকারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
ছবি: জয়ন্ত দাস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.