Advertisement
Advertisement
স্মৃতিশক্তি, ওড়িশার বৃদ্ধ

তিন দশক পর ফিরল স্মৃতিশক্তি, ঘাটাল থেকে ওড়িশা ফিরলেন বৃদ্ধ

ঘাটাল হাসপাতালে ভরতি ছিলেন তিনি।

An old man returns home from Ghatal after 30 years
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:April 5, 2019 4:51 pm
  • Updated:April 5, 2019 4:51 pm  

শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: ত্রিশ বছর আগে দুর্ঘটনায় মাথায় চোট পেয়ে স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন ওড়িশার দেওপাদা গ্রামের বাসিন্দা শ্যামসুন্দর পারিদা। ঘুরতে ঘুরতে বছর তিনেক আগে ঠাঁই হয়েছিল ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে। হাসপাতালের চিকিৎসকদের চিকিৎসায় স্মৃতিশক্তি ফিরে বৃহস্পতিবার বাড়ির লোকের সঙ্গে ফিরে গেলেন বছর ৭৫-এর বৃদ্ধ শ্যামসুন্দরবাবু। যাওয়ার সময় হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স, কর্মচারীদের কাঁদিয়ে ছাড়লেন চাচাজি। এমন ঘটনার সাক্ষী রইলেন ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালের সুপার কুণাল মুখোপাধ্যায় থেকে শুরু করে চিকিৎসক, নার্স এবং ঘাটাল থানার পুলিশকর্মীরা। নিজের পরিবারের লোকের সঙ্গে ফিরে যেতে পেরে বেজায় খুশি বৃদ্ধ শ্যামসুন্দরবাবু। আনন্দে কেঁদেও ফেললেন।

ঘটনায় শুরু, শ্যামসুন্দর পারিদার বাড়ি ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার বৈশিঙা থানার দেওপাদা গ্রামে। সাধারণ পরিবারের শ্যামসুন্দরবাবু ছিলেন আত্মভোলা ধরনের। বিয়ে করেননি। স্থানীয় একটি দোকানে কাজ করতেন। বছর ত্রিশ আগে পথ দুর্ঘটনায় মাথায় জোরালো চোট পেয়েছিলেন তিনি। ফলে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। হারিয়ে ফেলেন স্মৃতি শক্তি। এক সময় বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান শ্যামসুন্দরবাবু। ঘুরতে ঘুরতে বছর দশেক আগে দাসপুরের সোনাখালি বাজারে চলে আসেন। নিজের নাম ঠিকানা কিছুই বলতে পারেননি। চোর সন্দেহে স্থানীয় লোকজন কিছুটা মারধরও করেছিল বলে অভিযোগ। জখম অবস্থায় সোনাখালি গ্রামীণ হাসপাতালে তাঁকে ভরতি করা হয়।

Advertisement

[ আরও পড়ুন: নজরে চা বাগানের সমাধান,দশরথ তিরকের প্রচারে ইঙ্গিত মন্ত্রী রাজীবের ]

বছর সাতেক সোনাখালি গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসার পর কোনও পরিবর্তন না হওয়ায় তাঁকে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। গত ২০১৬ সালের ছয় ফেব্রুয়ারি থেকে তাঁর মানসিক চিকিৎসা শুরু হয়। হাসপাতাল সুপার কুণাল মুখোপাধ্যায় বলেন, “শ্যামসুন্দরবাবুর চিকিৎসার জন্য সার্জেন থেকে শুরু করে মেডিসিন, এমনকী মনোরোগ বিশেষজ্ঞ দিয়ে চিকিৎসা শুরু হয়। চিকিৎসক ও নার্সদের সেবার ফলে ধীরে ধীরে সুস্থ হতে থাকেন শ্যামসুন্দরবাবু। দিন দশেক আগে নিজের নাম ঠিকানা বলতে পারেন। তারপরই আমরা ঘাটাল থানার সঙ্গে যোগাযোগ করি।”

এরপর ঘাটাল থানার ওসি দেবাংশু ভৌমিক সরাসরি যোগাযোগ করেন বৈশিঙা থানার আইসির সঙ্গে। সেখানকার পুলিশ দেওপাদা গ্রামে শ্যামসুন্দরবাবুর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরিবারে বয়ে যায় খুশির হাওয়া। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার আইসির চিঠি নিয়ে ঘাটালে পৌঁছে যান শ্যামসুন্দরবাবুর খুড়তুতো ভাই ঈশ্বর পারিদা এবং ভাইপো অশোক পারিদা। শ্যামসুন্দরবাবুকে চিনতে পেরে আনন্দে কেঁদে ফেলে ঈশ্বরবাবুর ত্রিশ বছর আগের হারানো দাদাকে ফিরে পেয়ে খুশিতে ভরে যান তাঁরা। বারবার ঘাটাল মহকুমা হাসপাতাল, ঘাটাল থানা সেই সঙ্গে রাজ্য সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন ঈশ্বরবাবু। বাড়ি ফিরে যাওয়ার সময় হাসপাতাল সুপার কুণাল মুখোপাধ্যায় চাচাজির জন্য নতুন জামাকাপড় কিনে দেন। হাতে দেন খাবারের প্যাকেট। শ্যামসুন্দরবাবু হয়ে উঠেছেন চাচাজি। সেই চাচাজি বলেন, “কী বলে যে ধন্যবাদ দেব আমার ভাষা নেই। এঁরা আমার পিতৃ স্নেহে চিকিৎসা করেছেন। আমি কোনও দিন ভুলব না।”  

[ আরও পড়ুন: অশ্বত্থে পরিণত হয়েছে সদ্যোজাত শিশু! ‘স্বপ্নাদেশ’ পেয়ে গাছে জল ঢালার ধুম ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement