শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: ছেলেকে পুকুরে ডুবিয়ে মেরে ফেলেছে বৃদ্ধা, এই সন্দেহে তাঁর গায়ে আগুন লাগানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠল প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। বৃদ্ধাকে বাঁচাতে গেলে বটি হাতে স্থানীয় মহিলাদের দিকে বটি হাতে ধেয়ে আসলেন ওই ব্যক্তি। শেষ পর্যন্ত অবশ্য পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার দিনভর উত্তপ্ত উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের দেবীনগরের দেবপুরী।
ঘটনার সূত্রপাত প্রায় মাস ছ’য়েক আগে। কুলিক নদীতে প্রতিবেশী এক কিশোর পড়শি চার বন্ধুর সঙ্গে স্নান করতে গিয়েছিল। সেখানে আকস্মিকভাবে বছর ষোলোর আগ্নিক মল্লিক নামে ওই কিশোরের মৃত্যু হয়। মৃতের বাবা দেব মল্লিকের অভিযোগ, ব্যক্তিগত শত্রুতার প্রতিবেশী বরুণ সাহার মা তাঁর ছেলেকে খুন করেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেই সন্দেহের বশেই বুধবার সন্ধেয় বাড়ি ফেরার পথে বরুণের বৃদ্ধা মা বিজয়াদেবীর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে মিলন মল্লিকের পরিবারের লোকজন। এই ঘটনা জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন প্রতিবেশীরা। প্রতিবাদ করতে গেলে স্থানীয় মহিলাদের দিকে বটি হাতে ছুটে আসেন মিলন মল্লিকের স্ত্রী মৌমিতা। তাঁদেরও মেরে ফেলার হুমকি দেন ওই মহিলা। এই ঘটনা জানাজানি হতেই প্রচুর লোকজন এলাকায় ভিড় জমাতে থাকেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশবাহিনীও। এরপরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
আক্রান্ত বৃদ্ধার ছেলে বরুণ সাহা পেশায় অ্যাম্বুল্যান্স চালক। তিনি বলেন, “আমার মা দুধ নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। সেইসময় আচমকা মিলনের পরিজনেরা আমার মায়ের গায়ে আগুন ধরিয়ে খুন করার চেষ্টা করে। পাড়ার লোকজন বাঁচিয়েছে। কিশোরের জলে ডুবে মৃত্যুর সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই। তারপরও মাঝে মাঝেই আমাদের উপর হামলা হচ্ছে। অনেকদিন বাড়ি ছাড়া ছিলাম। পাড়ায় আসতেই আবার অত্যাচার শুরু করেছে।” অন্যদিকে, মৃতের কাকা মিলন মল্লিক আগুন ধরানোর ঘটনা পুরোপুরি অস্বীকার করে বলেন, “আমার স্ত্রীর উপর হামলা করার চেষ্টা করা হয়। তাই প্রতিরোধের চেষ্টা করে আমার স্ত্রী।” স্বাভাবিকভাবে দুই পক্ষের অভিযোগ-পালটা অভিযোগে ধোঁয়াশায় পুলিশ। তবে পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেন,‘‘দুই পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.