সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: প্রায় দুশো বছরের পুরোনো জমিদার বাড়ি ভাঙতে গিয়ে উদ্ধার লোহার সিন্দুক। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ঢোলাহাটের বাহিরচকের ঘটনা। পুরনো বাড়ির ইঁটের দেওয়ালের ভেতর থেকে সিন্দুকটি উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে এই সিন্দুক ঘিরেই ক্রমশ রহস্য দানা বাঁধে স্থানীয়দের মনে। সিন্দুক দেখতে ভিড় জমান কৌতূহলী স্থানীয়রা।
সুন্দরবনের ঢোলাহাটের বাহিরচক। এককালে এইখানেই ছিল মণ্ডল জমিদারের স্থপতি। তবে কালের সঙ্গে তাল মিলিয়ে হারিয়েছে সেই জমিদারি, হারিয়েছে মণ্ডল বাড়ির জৌলুস। জমিদারিত্বের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে রয়ে গিয়েছে দু’শো বছরের পুরনো বাড়িটা। পলেস্তরা খসে পড়া জীর্ণ বাড়িটার চেহারা পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। স্থানীয়রা জানান, মুকুন্দ মণ্ডল মারা যাওয়ার পর তার পরিজনেরা বাড়ি ছেড়ে যে যার মতো চলে যায়। তাদের মধ্যে কেউ ডায়মন্ড হারবার, কেউ জয়নগর, কেউবা আবার মেদিনীপুরে গিয়ে বসবাস করছেন। তবে বাহিরচকে তাঁদের পুরনো জমিদার বাড়ি এতদিন অবহেলায় পড়ে থাকলেও সম্প্রতি বাড়ির শরিকরা মিলে তা বিক্রি করে দেয়। মণ্ডল বাড়ির এক শরিক ভীম মণ্ডল জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিক্রি হয়ে যাওয়া ওই বাড়ি ভাঙার কাজ চলছিল। দুপুর নাগাদ বাড়িটির এক পাশের ইঁটের দেওয়াল ভাঙা চলছিল। তখনই হঠাৎই কোনও ধাতব জিনিসের শব্দ পায় শ্রমিকরা। কিছুটা ভাঙার পরেই ইঁটের দেওয়ালের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে লোহার একটি সিন্দুক। আর সে খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকার মানুষ ভিড় জমায় মন্ডলদের জমিদার বাড়ির সামনে।
কৌতুহলী স্থনীয়রা মুহূর্তের মধ্যেই সিন্দুকটি ভেঙে তার ভিতরে কী আছে তা দেখতে থাকেন। শ্রমিকরা জানান, ওই সিন্দুকের ভিতরে একটি দুষ্প্রাপ্য দেবীমূর্তি ও কিছু ধাতব মুদ্রা ছিল। কয়েকজন স্থানীয় খবর দেয় ঢোলাহাট থানার পুলিশের কাছে। তবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই মূর্তি-সহ বেশকিছু মুদ্রা লোপাট হয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন গ্রামবাসী। পুলিশ এসে দেখে লোহার ভাঙা সিন্দুক থেকে কিছু ধাতব মুদ্রা উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পুলিশ জানায়, সিন্দুকটির ভেতর সত্যিই কোনও মূর্তি ছিল কিনা এবং থাকলেও তার প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব কতখানি তা তদন্ত করে দেখা হত। তবে ওই সিন্দুকের ভিতর কোনও ধাতব মূর্তি ছিল কিনা সে ব্যাপারে পুলিশ এখনও নিশ্চিত নয়। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জমিদার বাড়ির সমস্ত শরিকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.