দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: ছেলে খোঁজ রাখে না৷ বাড়িতে কী অবস্থায় রয়েছেন বাবা, সে খোঁজও নেন না৷ একা থাকতে থাকতে অত্যধিক গরমে ঘরবন্দি হয়ে মৃত্যু হল অসহায় এক বৃদ্ধের৷ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের গোলাবাড়ি অঞ্চলের ইটখোলা গ্রামে।
বয়সের ভারে ন্যুব্জ ওই এলাকার বাসিন্দা মসলেম গাজি৷ স্ত্রী মারা গিয়েছে আগেই৷ বৃদ্ধাবস্থায় ভরসা বলতে এক মেয়ে এবং এক ছেলে৷ মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে৷ শ্বশুরবাড়ি নিয়ে বেজায় ব্যস্ত তিনি৷ তাই বাবার খোঁজ নেওয়ার সময় পান না৷ মসলেম গাজির ছেলেরও একইরকম অবস্থা৷ তিনি কলকাতায় কর্মরত৷ কাজের ফাঁকে সেভাবে দেখতেন না বৃদ্ধ বাবাকে৷
অভিযোগ, ছেলেমেয়ে তাঁর খাওয়াদাওয়ার খরচও দিতেন না৷ তাই বাধ্য হয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে কোনওক্রমে দিন চলত সত্তরোর্ধ্ব মসলেম গাজির৷ গত তিনদিন ধরে ছেলে কলকাতায় চলে গিয়েছিলেন৷ সেই সময়ে আর বৃদ্ধকে দেখতে পাননি কেউই৷ তারপর হঠাৎ করেই বৃদ্ধের বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ পান প্রতিবেশীরা৷ খবর দেওয়া হয় ক্যানিং থানায়৷ প্রতিবেশীদের থেকে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে পুলিশ বৃদ্ধের বাড়িতে পৌঁছায়৷ দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে অবাক হয়ে যান তাঁরা৷ দেখেন, ঘরের মধ্যেই পড়ে রয়েছেন ওই বৃদ্ধ৷ কিছুক্ষণের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে বৃদ্ধ আর বেঁচে নেই৷ ক্যানিং থানার পুলিশ বৃদ্ধের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে৷
বছর সত্তরের অসহায় ওই বৃদ্ধের প্রতিবেশীদের দাবি, ছেলেমেয়ের অবহেলাতেই জীবনের শেষ কটাদিন কাটিয়েছেন ওই বৃদ্ধ৷ সন্তানেরা দেখাশোনা করেনি বলেই এভাবে তাঁর মৃত্যু হল বলেও দাবি প্রতিবেশীদের৷ স্বাভাবিক মৃত্যু নাকি নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা৷প্রকৃত কারণ জানতে মৃতের ছেলেমেয়ের সঙ্গেও কথা বলেছে পুলিশ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.