শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: মৃত বৃদ্ধ করোনা (Corona Virus) আক্রান্ত! স্রেফ এই সন্দেহে সৎকারে অংশ নেওয়া তো দূর-অস্ত, উলটে পরিবারকে বাধা দিলেন প্রতিবেশীরা। যার জেরে দীর্ঘক্ষণ বাড়িতেই পড়ে থাকে দেহ। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে মঙ্গলবার দুপুরে সৎকারের ব্যবস্থা করা হয়। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে চন্দ্রকোনা (Chandrakona) দুই নম্বর ব্লকের ডালিমাবাড়ি গ্রামে।
জানা গিয়েছে, ডালিমাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা বছর ৬২-এর অমিয় ভট্টাচার্য। প্রায় কুড়ি দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন তিনি। পরীক্ষা করা হলে জানা যায়, তাঁর জন্ডিস হয়েছে। এরপর গত সপ্তাহে শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই গ্রামবাসীরা অমিয়বাবুর করোনা পরীক্ষার দাবি জানান। কিন্তু বৃদ্ধের পরিবারের সদস্যরা কেউই তাতে রাজি ছিলেন না। এই নিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে বচসাও হয় তাঁদের। ফলে ক্ষোভ ছিলই স্থানীয়দের মধ্যে। এই পরিস্থিতি সোমবার রাতে মৃত্যু হয় অমিয়বাবুর। অভিযোগ, দেহ ঘর থেকে বের করতেই একত্রিত হয়ে ভট্টাচার্য পরিবারকে বাধা দেয় গ্রামবাসীরা। বাধ্য হয়ে সারারাত বাড়িতেই রাখতে হয় দেহ। পরে মঙ্গলবার সকাল দশটা নাগাদ মৃতের পরিজনরা গ্রামবাসীদের সাহায্য ছাড়াই দেহ শ্মশানে নিয়ে যান। সেখানেও দেহ সৎকার করতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ।
সেখানে মৃতের ছেলে অলোক ভট্টাচার্য বলেন, “বাবার টাইফয়েড হয়েছিল। পরে জন্ডিস হয়। সেই কারনেই মৃত্যু। আমরা তাহলে করোনা পরীক্ষা করতে যাবে কেন?” এক গ্রামবাসীর কথায়, “আমরা মৃতদেহ সৎকারে বাধা দিতে চাইনি। অমিয়বাবু প্রায় কুড়িদিন প্রবল জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগে মারা গিয়েছেন। কোনও হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়নি। হাতুড়ে চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করা হয়েছে। যেহেতু এখন করোনার আবহ চলছে, তাই আমরা পরীক্ষার দাবি করেছিলাম। কিন্তু ওনারা তাতে রাজি নন। কী সমস্যা পরীক্ষা করাতে?” ওই ব্যক্তির কথায়, এবিষয়ে প্রশাসনকেও জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এদিন দুপক্ষের বক্তব্য শোনার পর পুলিশ দেহ সৎকারের নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি, পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, মৃতের বাড়ির সমস্ত সদস্যের কোভিড-১৯ টেস্ট করা হবে। রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত সবাই হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.