ছবি : প্রতীকী
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ঘরে ঢুকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আদিবাসী বৃদ্ধ দম্পতির মাথা-ধড় আলাদা করে খুনের পর মুন্ডু নিয়ে পালাল আততায়ীরা! শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ পুরুলিয়ার (Purulia) আড়শা থানার অযোধ্যা পাহাড়তলীর তানাসি গ্রাম থেকে ওই বৃদ্ধ দম্পতির মুণ্ডহীন মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু কেন এই নৃশংসতা? তা নিয়ে ধন্দে আড়শা থানা। এই ঘটনার পিছনে জমি সংক্রান্ত কোনও বিবাদ বা বছর কুড়ি আগের ‘ডাইনি’ অপবাদ ও সেই সংক্রান্ত অশান্তির কোনও যোগ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস. সেলভামুরুগন বলেন, “খুনের ঘটনার কারণ জানা যায়নি। তদন্ত চলছে।”
নিহত বৃদ্ধ দম্পতির নাম পাতই মাঝি ও লেশকি মাঝি। তাঁদের বাড়ি তানাসিতেই। মূলত চাষাবাদ ও প্রাণীপালন করেই তাঁদের সংসার চলত। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে দম্পতির ছোট ছেলে মুকুন্দ মাঝি ঘরে গিয়ে দেখেন তার বাবা-মা’র মুণ্ডহীন মৃতদেহ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এই খবর পাওয়ার পরই পুলিশ তানাসিতে গিয়ে দেহ উদ্ধার করে। এই জোড়া খুনের ঘটনায় আড়শা থানার ওসি ছাড়াও তদন্তে যান সিআই ও ডিএসপি। এমৃতদের ছোট ছেলে মুকন্দ জানান, “আমি ঘরে ছিলাম না। স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি কালিপুরে ছিলাম। সেখানে থেকেই এই খবর পাই। কীভাবে, কেন বাবা-মাকে খুন করা হল বুঝতে পারছি না। বছর খানেক আগে জমির পাট্টা নিয়ে কাকার সঙ্গে একটা ঝামেলা ছিল। কিন্তু সেটা মিটমাট হয়ে যায়। তাছাড়া বছর কুড়ি আগে পড়শিরা মাকে ‘ডাইনি’ বলায় একটা ঝামেলা হয়। ওই ঘটনায় গরু বিক্রি করে জরিমানা দিতে হয়। তবে ওই ঘটনা ষোল আনা মিটে গিয়েছে।” যে পড়শির সঙ্গে ওই ‘ডাইনি’ নিয়ে ঝামেলা তাঁরা এখন আর গ্রামে থাকেন না। তাদের জমি খালিই পড়ে রয়েছে। এছাড়া পাট্টার জমি নিয়ে যে কাকার সঙ্গে ঝামেলা হয় এদিন তাঁরাও ওই গ্রামের নিচ পাড়ায় আরেকটি ঘরে ছিলেন। ফলে খুনের পিছনে কে রয়েছে তা নিয়ে সম্পূর্ণ অন্ধকারে পুলিশ।
এদিনের ঘটনার সময় দম্পতির বড় ছেলের স্ত্রী তাঁর ছেলেকে নিয়ে পাশের বাড়িতে ছিলেন। তিনিও এই ঘটনার কিছু জানেন না বলে পুলিশকে জানান। ফলে এই জোড়া খুনের রহস্যের কিনারাই করতে পারছে না পুলিশ। এদিনের ঘটনার পর থেকেই তানাসি গ্রাম শুনশান। নিহত বৃদ্ধ দম্পতির ঘরের দরজায় শিকল তোলা। পড়শিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই ঘটনা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করলেও কোনও লাভ হচ্ছে না। মুখের ওপর দরজা দিয়ে দিচ্ছেন বাসিন্দারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.