নন্দন দত্ত, সিউড়ি: বাংলার মাটিতে গেরুয়া ব্রিগেডের ভিত ঠিক কেমন, কতটা দুর্বল আর কতটা পোক্ত, তা বোঝা গিয়েছে বিগত একাধিক নির্বাচনে। উত্তরবঙ্গে ঘর কিছুটা গোছাতে পারলেও দক্ষিণবঙ্গে বিজেপি (BJP) কার্যত দাঁত ফোটাতে পারেনি। তার মধ্যে বেশি ধাক্কা খেতে হয়েছে বীরভূমে। দোর্দণ্ডপ্রতাপ জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal)নিজের সাংগঠনিক শক্তির জোরে রুখে দিয়েছেন পদ্ম-ঝড়। এবার বীরভূম অনুব্রতহীন। গরু পাচার মামলায় দিল্লিতে জেলবন্দি তিনি। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়েই দক্ষিণবঙ্গের লাল মাটিতে সংগঠন মজবুত করতে চাইছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। এবার বঙ্গ সফরে এসে সিউড়িতে জেলার দলীয় কার্যালয়ের উদ্বোধন করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। নবনির্মিত শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি ভবনে রয়েছে ১০টি ঘর। এবার থেকে জেলা বিজেপির সমস্ত কর্মসূচিই হবে এই ভবনে।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শুক্রবার বঙ্গ সফরে এসে প্রথমেই অমিত শাহ চলে যান বীরভূমের সিউড়িতে (Suri)। সার্কিট হাউসে মধ্যাহ্নভোজের পর তিনি দুপুরে চলে যান বেণীমাধব স্কুলের মাঠে। সেখানে জনসভা সেরে যান সিউড়িতে নতুন পার্টি অফিসে। সব প্রস্তুতই ছিল। পুরোহিতের মন্ত্রোচ্চারণের মধ্যে নারকেল ফাটিয়ে, প্রদীপ জ্বালিয়ে কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন অমিত শাহ। ১৪ নং জাতীয় সড়কের পাশে এই পার্টি অফিসে বীরভূম এবং বোলপুর – দুই সাংগঠনিক জেলারই কাজকর্ম হবে।
এর আগে বাংলায় এসে প্রধানমন্ত্রী সংগঠন মজবুত করার পরামর্শ হিসেবে জানিয়েছিলেন, প্রতি জেলায় দলের নিজস্ব ভবন, কার্যালয় থাকবে। এতদিন বীরভূম জেলায় নিজস্ব কোনও কার্যালয় ছিল না গেরুয়া শিবিরের। পঞ্চায়েত ভোটের আগে সিউড়িতে তার উদ্বোধন হল অমিত শাহর হাত ধরে। ১০ টি ঘরবিশিষ্ট এই দলীয় কার্যালয়ে থাকবেন জেলা সভাপতি। এছাড়া বৈঠক তো বটেই, অতিথিরাও এলে এখানে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। বেশ বড়সড় ভাবেই বীরভূম ও বোলপুর সাংগঠনিক জেলার জন্য স্থায়ী নিজস্ব কার্যালয় তৈরি করল বিজেপি।
এদিন কার্যালয়টি উদ্বোধনের পর অমিত শাহ জেলার কার্যকর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন নতুন পার্টি অফিসে বসে। সূত্রের খবর, ৩৫ শতাংশ সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলায় সংখ্যালঘুদের কাছে টানার বার্তা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এদিন সিউড়ির সভামঞ্চ থেকে তাঁর মুখে শোনা গিয়েছিল বগটুই অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের প্রতি শোকের কথা। সে কথাই বুঝিয়ে দিলেন জেলা বিজেপির কর্মীদের। এদিন পার্টি অফিস থেকে অমিত শাহ বেরনোর পরই তাঁর সঙ্গে দেখা করেন বগটুইয়ের স্বজনহারা মিহিলাল শেখ। দু’জনের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ কথা হয়েছে বলে খবর। আর এই মিহিলালদের দিকেই বাড়তি নজর দিতে হবে, জেলা সংগঠনকে এমনই নির্দেশ দিয়ে গেলেন অমিত শাহ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.