Advertisement
Advertisement

Breaking News

Amit Shah

পরীক্ষা না দিয়েই কল্যাণী এইমসে চাকরি! এবার নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে নাম দুই বিজেপি বিধায়কের

বিধায়কেরদের বিরুদ্ধে অমিত শাহর (Amit Shah) কাছে নালিশ করেছেন এক বিজেপি নেতাই।

Amid SSC row, Bengal BJP leader claims party MLAs also took favours | Sangbad Pratidin
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:May 20, 2022 9:48 am
  • Updated:May 20, 2022 9:49 am  

সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: এইমসে (AIIMS) চাকরি কেলেঙ্কারিতে নাম জড়াল বিজেপির। বাঁকুড়ার বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানার কন্যা ও নদিয়ার (Nadia) চাকদহের বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষের পুত্রবধূর চাকরি হয়েছে কল্যাণীর কেন্দ্রীয় চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে। আর এই চাকরি হয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সুপারিশেই! কোনও পরীক্ষা ছাড়াই! এমন অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর (Amit Shah) কাছে নালিশ করেছেন এক বিজেপি নেতাই। এই নিয়োগ কেলেঙ্কারি নিয়ে তোলপাড় বঙ্গ বিজেপির অন্দরমহলে।

স্কুল সার্ভিস কমিশনে (SSC) নিয়োগে বিতর্ক নিয়ে রাজ্যের শাসকদলকে নিশানা করেছে বিজেপি (BJP)। কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ‘ব্যবহার’ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। আর তার মধ্যেই প্যাঁচে গেরুয়া শিবির। প্রশ্ন উঠছে, ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়েই পড়ল! বাঁকুড়া ও নদিয়া জেলার দুই বিধায়কের ‘কীর্তিতে’ যথেষ্ট অস্বস্তিতে বিজেপি শিবির। কেউ কেউ ‘শাক দিয়ে মাছ ঢাকার’ চেষ্টা করলেও অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, এবার বিজেপি সিবিআই চাক। কেন দুই বিধায়ককে ও তাঁদের পুত্র-পুত্রবধূকে নিজাম প্যালেসে ডেকে জেরা করা হবে না? দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “মধ্যপ্রদেশে ব্যাপম কেলেঙ্কারি দেখেছি। কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানেও স্বজনপোষণ, দুর্নীতি, কেলেঙ্কারি চলছে! পরীক্ষার বালাই নেই। অভিযোগ উঠছে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার, তিনি নাকি এক নেত্রীর মাধ্যমে নিয়োগ করছেন। সেই ঘটনারও তো সমানভাবে তদন্ত করা উচিত। ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের পদে পরীক্ষার বালাই নেই! এবার সিবিআই চাওয়া হোক। বিজেপি নেতার কন্যাকে জেরা করুক।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘I LOVE YOU, THE END’, হাতে লিখে ‘আত্মঘাতী’ যুবক, ঘর থেকে উদ্ধার ঝুলন্ত দেহ]

ঘটনা হল, দিনকুড়ি আগে চাকদহের বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষের পূত্রবধূ এইমস-এর নার্সিং কলেজে চাকরি পেয়েছেন আপার ডিভিশন ক্লার্ক পদে। পাশাপাশি বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানার মেয়ে মৈত্রী দানাও নার্সিং কলেজে ডেটা এন্ট্রি অপারেটর পদে চাকরি করছেন। দলের প্রভাবশালী বিজেপি নেতৃত্বের সুপারিশে এই দুই বিধায়কের পূত্রবধূ ও মেয়ের চাকরি এইমস-এ হয়েছে বলে দলের তরফে এই অভিযোগ করেন বিজেপির নদিয়া সাংগঠনিক জেলা কমিটির সদস্য পার্থ চট্টোপাধ্যায়। স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে অমিত শাহকে গত ৬ মে চিঠিও দিয়েছেন তিনি। পার্থবাবু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠিতে লিখেছেন, “সাতদিন আগে চাকদহের বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ তাঁর পূত্রবধূকে কল্যাণীর এইমসে চাকরির নিয়োগে তদ্বির করেছিলেন। বাঁকুড়ার বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানাও মেয়ের চাকরির ব্যবস্থা করেছেন। এই নেতারা তাঁদের ব্যক্তিগত অ্যাজেন্ডা পূরণ করছেন পার্টি এবং তাঁদের পদকে ব্যবহার করে। অথচ বিজেপির সাধারণ কর্মী, যাঁরা লড়াই করছেন, তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন দুর্নীতিপরায়ণ মনোভাবের জন্য।”

সংবাদমাধ্যমে বঙ্কিম ঘোষের অবশ্য দাবি, “এইমস-এর তরফে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল ৩৬টি পোস্টের জন্য। পূত্রবধূ পরীক্ষা দিয়েই চাকরি পেয়েছে।” বঙ্কিমবাবুর ছেলেও কল্যাণীর আর একটি কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউশন অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইসার)-এ চাকরি করেন। অন্যদিকে, বাঁকুড়ার বিধায়কের বক্তব্য, “আমার মেয়ে সুপারিশ বা প্রভাব খাটিয়ে নয়, আবেদনের মাধ্যমে একটা ঠিকাদার সংস্থার অধীনে কাজ করছে। এই নোংরা প্রচার বন্ধ করা উচিত।” নীলাদ্রিশেখরের মেয়ের চাকরির জন্য কেন্দ্রীয় শিক্ষা রাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বাঁকুড়ার সাংসদ ডা. সুভাষ সরকার সুপারিশ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সুভাষবাবুর দাবি, “আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না। শুনেছি একটি ঠিকাদার সংস্থার অধীনে অস্থায়ী চাকরি পেয়েছেন।” তিনি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, দলবদলু এক প্রভাবশালী বিজেপি নেতার মাধ্যমেই মৈত্রী দানার চাকরি হয়েছে। তা হলে কি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষের পুত্রবধূর চাকরি হওয়ার ক্ষেত্রেও ওই দলবদলু প্রভাবশালী বিজেপি নেতার হাত রয়েছে? সামনে আসছে নদিয়া জেলার বিজেপি নেত্রী তথা দলের রাজ্য কমিটির সদস্য দীপা বিশ্বাসের নাম। তাঁর মাধ্যমে দলের প্রভাবশালীদের ঘনিষ্ঠরা চাকরি পাচ্ছেন বলে অভিযোগ। দীপার অবশ্য দাবি, “যদি অনিয়ম থাকে তা হলে তদন্ত হোক। সত্য সামনে আসুক।”

[আরও পড়ুন: মানবিকতার নজির, হাসপাতালের রোগীদের হাতে খাবার তুলে দিলেন মুর্শিদাবাদের পুলিশকর্তা]

পুরো বিষয় নিয়ে অস্বস্তির পাশাপাশি তোলপাড় বঙ্গ বিজেপি। মাঠে-ময়দানে লড়াই করা দলের কর্মীরা চাকরি পাচ্ছেন না। শহিদ পরিবারের সদস্যদেরও চাকরির প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি। তখন নেতাদের আত্মীয়রা সুপারিশে চাকরি পেয়ে যাচ্ছেন। রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার এ প্রসঙ্গে বলেন, “যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি না হলে এইমস কর্তৃপক্ষের তদন্ত করা উচিত। দলের সঙ্গেও কথা বলব। অভিযোগ, সত্যি হলে তা দলের পক্ষে মঙ্গলজনক নয়। এবং সেটা কখনওই কাম্য নয়।” বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, “সরকারি পোস্টে বিনা পরীক্ষায় কেউ ঢুকতে পারে না। টাকা লেনদেন বা বেআইনি নিয়োগ হলে তা কোনওভাবেই কাম্য নয়।” অভিযোগ নিয়ে কল্যাণী এইমস-এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর রামজি সিংকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তৃণমূল নিশানা করে বলেছে, “কাচের ঘরে বসে ঢিল ছুড়ছে বিজেপি, সিপিএম।” তৃণমূলের হরিণঘাটা ব্লক সভাপতি চঞ্চল দেবনাথ অভিযোগ করেছেন, “বঙ্কিম ঘোষ এর আগেও ছেলে শৌভিককে কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে দিয়েছেন।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement