সৌরভ মাজি, বর্ধমান: টাকা না থাকায় গয়নার বিনিময়ে অ্যাম্বুল্যান্সে রোগীকে বর্ধমান মেডিক্যালে পৌঁছে দেওয়ার অভিযোগে উত্তপ্ত পূর্ব বর্ধমানের (Purba Bardhaman) জামালপুর। পঞ্চায়েত সভাপতির নির্দেশে রোগীর পরিবারকে গয়না ফেরাতে বাধ্য হলেন অ্যাম্বুল্যান্স চালক। শোকজ করা হল অভিযুক্তকে। চালকের আচরনের তীব্র নিন্দা করছেন স্থানীয়রা।
জানা গিয়েছে, জামালপুরের উত্তরশুড়া গ্রামের বাসিন্দা বছর ৩৪-এর বুল্টি মালিক দিন দশেক ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। মঙ্গলবার অসুস্থতা বাড়লে পরিবারের লোকজন তাঁকে জামালপুর ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যান। মহিলার শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকায় তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যালে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন ডাক্তাররা। এরপরই শুরু সমস্যা। পরিবারের অভিযোগ, জামালপুর থেকে বর্ধমানমেডিক্যালে যেতে ১২০০ টাকা ভাড়া চান অ্যাম্বুল্যান্স চালক। অবশেষে এগারোশো টাকায় রফা হয়। কিন্তু অগ্রিম চান চালক। দরিদ্র ওই পরিবারের কাছে টাকাকড়ি কিছুই ছিল না। ফলে বর্ধমান মেডিক্যালে পৌঁছতে রোগীর কানের দুল খুলে অ্যাম্বুল্যান্স চালককে দিতে বাধ্য হয় পরিবার। সেই সোনার দুলের বদলে অ্যাম্বুলেন্স চালক মাত্র ২ হাজার টাকা দেন। রোগীকে বর্ধমান হাসপাতালে পৌঁছনোর পরও বেশ কিছু টানা নেন চালক। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই দানা বাঁধে বিতর্ক। হস্তক্ষেপ করেন জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মেহমুদ খান।
পঞ্চায়েত সভাপতির নির্দেশে দুল ফেরত দিতে বাধ্য হন অভিযুক্ত। জানা গিয়েছে, দরিদ্র মানুষদের সুবিধার জন্য সাংসদ কোটার টাকায় অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়া হয়েছিল জামালপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েতে। সেই অ্যাম্বুল্যান্সে সংকটাপন্ন রোগীকে নিয়ে যেতে কানের সোনার দুল খুলে দেওয়ার ঘটনায় চোখ কপালে উঠছে অনেকেরই। সাংসদ তহবিলের টাকার অ্যাম্বুল্যান্স কাদের জন্য? সে প্রশ্নও তুলছেন অনেকে। এবিষয়ে অভিযুক্ত চালকের সাফাই, “টাকা জোগাড় করতে রোগীর আত্মীয়রাই স্বেচ্ছায় ওই সোনার দুল দিয়েছিলেন। আমি চাইনি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.