দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: রাত বাড়তেই জনস্রোত আছড়ে পড়ল গঙ্গাসাগরে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শত শত মানুষ যোগ দিচ্ছেন পুণ্যস্নানে। বুধবার সারাদিন চলবে স্নান। সাগর মেলাকে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে তৈরি প্রশাসনও। পুণ্যার্থীদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেই কারণে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স-সহ সমস্ত পরিষেবার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। প্রশাসনের দাবি, এবছর গঙ্গাসাগরে পুণ্যার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩৫ লক্ষ।
‘সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর একবার’। তাই পুণ্য অর্জনের জন্য মঙ্গলবার বিকেল থেকেই সাগরে জমছিল ভিড়। অস্থায়ী শেডগুলিকে তিলমাত্র জায়গা নেই। খোলা আকাশের নিচেও পুণ্যার্থীদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। উত্তরে হাওয়া আর প্রবল ঠান্ডাকে উপেক্ষা করে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীর মুখে একটাই আওয়াজ ‘কপিলমুনি কি জয়’, ‘গঙ্গামাঈ কি জয়’। অনেকেই গভীর রাতের প্রথম স্নান করার জন্য বসেছিলেন সাগরের তীরে। তবে অন্য বছরের মতো এবছর পুণ্যস্নানের মহেন্দ্রক্ষণ নিয়ে মতবিরোধ নেই। পঞ্জিকা মতে, ১৪ তারিখে গভীর রাত থেকে শুরু হয়ে তা চলবে ১৫ তারিখ ১২টা ২৪ মিনিট পর্যন্ত। জানিয়েছেন কপিল মুনি মন্দিরের মহন্ত সঞ্জয় দাস।
পুণ্য সঞ্চয়ের জন্য শুধু গোটা দেশ থেকে নয়, বিদেশ থেকেও এসেছেন তীর্থযাত্রীরা। সাগরসঙ্গমে স্নান সেরে কপিল মুনি মন্দিরে পুজো দিচ্ছেন পুণ্যার্থীরা। রাতের অন্ধকার বা ভোরের কুয়াশা, কোনও কিছুই দমাতে পারছে না তাঁদের। ঠান্ডাকে উপেক্ষা করেই সাগরে স্নান করছেন তাঁরা। প্রশাসনের পরিসংখ্যান এবং রাজ্যের মন্ত্রীদের দাবি, ইতিমধ্যে প্রায় ৩৫ লক্ষাধিক পূণ্যর্থী সাগরে এসে পৌঁছেছেন। মেলা থেকে স্নান সেরে ফিরেও গিয়েছেন অনেকে। পুরো মেলা পরিচালনার জন্য সাগরে উপস্থিত রয়েছেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, যুবকল্যাণমন্ত্রী অরুপ বিশ্বাস এবং বিদুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। সাগর মেলায় নজরদারির জন্য বাবুঘাট থেকে সাগরতট পর্যন্ত প্রায় এক হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। ৭টি ড্রোন পাহারা দিচ্ছে। মেগা কন্ট্রোল রুম বানানো হয়েছে। প্রতিটা ছবি ড্রোনের ছবি ও ক্যামেরার ছবি পাঠানো হচ্ছে এই কন্ট্রোল রুমে। জোয়ার ভাঁটার কারণে ভেসেল বা লঞ্চ পরিষেবা বন্ধ থাকলে তা বারবার জানানো হচ্ছে মাইকিং করে। বড় এলইডি টিভিতে ভেসে উঠছে জোয়ার ভাঁটার সময়।
মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “ইতিমধ্যে প্রায় ৩১ লক্ষ তীর্থযাত্রী স্নান সেরে ফিরে গিয়েছেন। আরও কিছু মানুষ রয়েছেন সাগরে। পুন্যস্নান চলছে। আরও মানুষ আসবেন। সুষ্ঠভাবে মেলা চলছে। ভারতের কোনও মেলাতে এত ভাল ব্যবস্থা থাকে না।” এদিন সাগরে কপিল মুনির মন্দিরে পুজো দেন অরুপ বিশ্বাস। স্নান সারেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
ছবি: অরিজিৎ সাহা
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.