সৌরভ মাজি, বর্ধমান: ভাইফোঁটা দিতে যাচ্ছিলেন বৃদ্ধা। মাঝরাস্তায় পথ আটকায় দুই যুবক। ভোর বেলায় কেন বেরিয়েছে? এমন প্রশ্ন তুলে ৬০ বছরের বৃদ্ধাকে নির্জন পুকুর পাড়ের একটি পরিত্যক্ত ঘরে তুলে নিয়ে গিয়ে পাশবিক অত্যাচারের অভিযোগ বছর পঁচিশের দুই যুবকের বিরুদ্ধে। আচমকাই পুকুরমালিক চলে যাওয়ায় ধরা পড়ে যায় ২ গুণধর! তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। নৃশংস এই ঘটনার সাক্ষী পূর্ব বর্ধমানের মেমারি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার ভাইফোঁটা দিতে যাবেন বলে খুব ভোরে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন ওই বৃদ্ধা। খুব সকাল সকাল ফোঁটা দিয়ে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরার ইচ্ছা ছিল। তাই ভোরেই রওনা হয়েছিলেন। ভাইয়ের বাড়ি হেঁটেই যাচ্ছিলেন। সেই সময় বেগুট এলাকায় একটি পুকুর পাড়ে বসে নেশা করছিল হাবা ও অর্ঘ্য নামে দুই যুবক। বৃদ্ধাকে একা যেতে দেখে পথ আটকায় তারা। এত ভোরে কোথায় যাচ্ছে, কেন যাচ্ছে, একা বেরিয়েছে কেন এইসব প্রশ্ন করতে থাকে। এর পর আচমকাই তারা মহিলাকে ওই পুকুর পাড়ে থাকা একটি ঘরে টেনে নিয়ে যায়। দরজা বন্ধ করে যৌন নির্যাতন শুরু করে। এদিকে, আচমকাই সেখানে চলে আসেন ওই পুকুরের মালিক। ঘরের ভিতর থেকে আওয়াজ পেয়ে তিনি ছুটে যান। দরজা খুলে অবাক হয়ে যান। দেখেন হাবা ওই বৃদ্ধাকে ধর্ষণের চেষ্টা করছে। তিনি হাবার চুলের মুঠি ধরে টেনে তোলেন। চেপে ধরে থাকেন। সেই সুযোগে অর্ঘ্য পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে স্থানীয়রা ছুটে যায়। হাবাকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। মেমারি থানার পুলিশ আটক করে তাকে। মহিলার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। এদিকে, অর্ঘ্য গ্রামে গিয়ে ভালো জামাকাপড় পরে পালানোর চেষ্টা করছিল। সেই সময় গ্রামবাসীরা তাকেও ধরে ফেলে। তাকেও পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। নির্যাতিতা মহিলা ওই দুইজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে জেলা পুলিশের একটি দল মেমারি থানার ওসি দেবাশিস নাগকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থল ঘুরে দেখে। পুকুর পাড়ের ঘরটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, হাবা পেশায় সাইকেল মিস্ত্রি। দিনভর নেশায় ডুবে থাকে। অর্ঘ্য মজুরের কাজ করে। কয়েকমাস জেলও খেটেছে। বিবাহিত অর্ঘ্যর চরিত্র ভালো নয় বলেই খবর। যার জেরে স্ত্রী, ছেলেকে নিয়ে তাঁর বাপের বাড়ি চলে গিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.