প্রতীকী ছবি।
জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: স্কুল থেকে দেওয়া বৃত্তির টাকা জমা পড়েছে কি না, তা জানতে বাবাকে না জানিয়ে দাদুর সঙ্গে ব্যাঙ্কে গিয়েছিল ছেলে। আর সেটাই ছিল অপরাধ! তার চরম ‘শাস্তি’ পেতে হল নাবালককে। বাড়ি ফেরার পর ছেলেকে শিকলে বেঁধে বেধড়ক মারের অভিযোগ উঠল বাবার বিরুদ্ধে। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর গোপালনগরের এমন অমানবিক ঘটনায় অভিযুক্ত বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম সঞ্জয় কর্মকার। পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। তিনি গোপালনগর থানার শুল্ক দুর্গাপুর এলাকার বাসিন্দা। সেখানেই স্ত্রী সোমা কর্মকার ও সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছেলেকে নিয়ে থাকেন। অভিযোগ, না জানিয়ে ব্যাঙ্কে যাওয়া ও ফিরে এসে পড়তে না বসার ‘অপরাধে’ ছেলেকে বেধড়ক মারধর করেন সঞ্জয়। সারারাত শিকল দিয়ে নাবালককে বেঁধে রাখা হয় বলে অভিযোগ। বাধা দিতে গেলে স্ত্রীকে মারধর ও একইভাবে বেঁধে রাখার হুমকি দেন অভিযুক্ত সঞ্জয়। ঘটনার পর বৃহস্পতিবার সকালে কোনওরকমে ছেলের শিকল খুলে তাকে নিয়ে বাপের বাড়ি বনগাঁয় চলে আসেন স্ত্রী সোমা কর্মকার। সেখান থেকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে থানায় খবর দেওয়া হয়। স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত সঞ্জয় মাঝেমধ্যেই নেশাগ্রস্ত অবস্থায় স্ত্রীকে মারধর করেন। বাদ যায় না ছেলেও। ধৃতের স্ত্রী সোমা বলেন, “মাঝেমধ্যেই আমাকে মারধর করে। ছেলেকেও মারে। বুধবার ছেলে ব্যাঙ্কে যায়। ফিরে এসে পড়তে না বসায় শিকল দিয়ে বেঁধে মারধর করে। ছেলে সারারাত ওই অবস্থাতেই ছিল। বাধা দিলে আমাকেও মারে। বলে, একইভাবে শিকলে বেঁধে রাখবে।” বাবার নির্যাতনের শিকার ওই পড়ুয়া জানায়, “স্কুলে বন্ধুদের থেকে শুনেছিলাম, ঐক্যশ্রী প্রকল্পের টাকা ব্যাঙ্কে জমা পড়ছে। আমার অ্যাকাউন্টে সেই টাকা এসেছে কি না, তাই জানতে দাদুর সঙ্গে ব্যাঙ্কে গিয়েছিলাম। বাবা তখন দেখেছিল। বাড়ি ফেরার পর বাবা শিকল দিয়ে বেঁধে মারতে থাকে। বাবাকে পুলিশ নিয়ে গিয়েছে, খারাপ লাগছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.