Advertisement
Advertisement

Breaking News

vote sharing

পাহাড়ে ভোট বিভাজন স্পষ্ট, এবার জিততে সব দলের ভরসা সমতল

দেড় দশক পর পাহাড়ে গণতন্ত্রের হাওয়া।

All partied worried about vote sharing in Hills
Published by: Paramita Paul
  • Posted:April 8, 2024 11:23 pm
  • Updated:April 8, 2024 11:23 pm  

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: দেড় দশক পর পাহাড়ে গণতন্ত্রের হাওয়া। হুইপ জারি করে কোনও একটি দলকে ভোট তুলে দেওয়ার কৌশল এবার নেই। ভোট বিভাজনের সমীকরণও স্পষ্ট। প্রার্থীদের তাই ভরসা এখন সমতলের ভোট। তাই প্রত্যেকে পাহাড় ছেড়ে সমতলের মাটি কামড়ে প্রচারে জোর দিয়েছে। পাহাড়ে প্রচার সামলাচ্ছেন জোট নেতৃত্ব। রাজনৈতিক মহলের মতে দীর্ঘদিন পর দার্জিলিং লোকসভা আসনে এমন দৃশ্য নজর কাড়ছে।

২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত পাহাড়ে লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থীর ভাগ্যবিধাতা ছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুং। তিনি বিজেপিকে সমর্থন করে যে হুইপ জারি করেছেন সেভাবেই ভোট পড়েছে। হেসেখেলে আসন তুলে নিয়েছে গেরুয়া শিবির। ২০১৯ সালের নির্বাচনে বিজেপির রাজু বিস্তা ৫৯.১৯ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। কিন্তু এবার রাজনৈতিক সমীকরণ ভিন্ন। পাহাড়ে নেই কোনও ‘গড ফাদার’ অথবা কোনও দলের একচ্ছত্র আধিপত্য। ভোট বিভাজিত জটিল অঙ্কে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ৬ মাস ধরে হামাসের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘাত, অবশেষে পিছু হটছে ইজরায়েল সেনা?]

রাজনৈতিক মহলের মতে, ১০৪ দিনের ধর্মঘট, ধ্বংসাত্মক আন্দোলনের জেরে বিমল গুরুংয়ের আত্মগোপন, অনীত থাপার উত্থানের পর পাহাড়ের রাজনৈতিক সমীকরণে সেই যে পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে আর থামেনি। অনীত থাপার দল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা এবার বড় ফ্যাক্টর। তাদের দখলে রয়েছে জিটিএ, পুরসভা, গ্রাম পঞ্চায়েত। লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সহযোগী দল হামরো পার্টির প্রভাব রয়েছে জিটিএ এবং গ্রাম পঞ্চায়েতে। বিমল গুরুংয়ের একচ্ছত্র আধিপত্য না থাকলেও কিছু ভোট রয়েছে। জিএনএলএফের কিছু প্রভাব রয়েছে চা বলয়ে এবং দার্জিলিং শহরে। স্বভাবতই পাহাড় থেকে বিরাট পরিমাণ ভোটের লিড নিয়ে সমতলে নেমে নিশ্চিত জয় বুঝে নেবেন সেই সুযোগ এবার কোনও দল পাচ্ছে না। ওই কারণেই যে পাহাড়ে ভোট প্রচারের দায়ভার জোট সঙ্গীর হাতে সঁপে দিয়ে তিন প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি, তৃণমূল ও কংগ্রেস প্রার্থীরা সমতলের মাটি কামড়ে পড়ে আছেন অস্বীকার করছেন না কোনও দলের নেতৃত্ব। তাদের দাবি, এই লোকসভা কেন্দ্রে ১৭ লক্ষ ৫৩ হাজার ৬৯৯ ভোটারের মধ্যে সাড়ে ১০ লক্ষ রয়েছে সমতলে। এখানে লিড না নিতে পারলে পাহাড়ের বহুধা বিভক্ত ভোটের ভরসায় থেকে খুব একটা লাভ হবে না।

[আরও পড়ুন: কংগ্রেসের পর সিপিএম, ভোটের আগে প্রায় ৫ কোটি টাকা ফ্রিজ আয়কর দপ্তরের]

যেমন, দার্জিলিং জেলা সিপিএম সম্পাদক সমন পাঠক বলেন, “পাহাড়ে ভোট সমীকরণ পুরো পালটে গিয়েছে। কোনও একদিকে ঢেলে ভোট হবে না। বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত ভোট। ওই কারণে সমতলে ভোটে এগিয়ে থাকা অত্যন্ত জরুরি হয়েছে।” প্রায় একই বক্তব্য জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জীবন মজুমদারের। তিনি বলেন, “পাহাড়ে কোনও দল বিরাট লিড নিয়ে বের হতে পারবে না। এছাড়াও সমতলে ভোটের সংখ্যা বেশি। ওই কারণে আমরা সমতলে প্রচারে জোর দিয়েছি। পাহাড়ে যা করার অজয় এডওয়ার্ড করছেন।” এবার দার্জিলিং লোকসভা আসনে ভোটের ফলাফল যে সমতলের ভোটের উপর বেশি নির্ভরশীল স্বীকার করছে তৃণমূল শিবির। সোমবারও তৃণমূল-ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা জোট প্রার্থী গোপাল লামা শিলিগুড়ির বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রচার করেছেন। আগের দিন রবিবাসরীয় প্রচারে পাল্লা দিয়েছেন বিজেপি-গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা জোটের প্রার্থী রাজু বিস্তা। সোমবার তিনি দিল্লি উড়ে যান। ভোট প্রচারে বেরিয়ে তৃণমূল-ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা জোট প্রার্থী সমতলের বুথ কমিটিগুলোকে টার্গেট বেঁধে দিয়েছেন। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি বুথ থেকে অন্তত দশ ভোটের লিড আনতে বলা হচ্ছে। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা (সমতল) সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ বলেন, “সমতলে আমাদের সাংগঠনিক শক্তি অত্যন্ত মজবুত। তাই লক্ষ্য পূরণে সমস্যা হবে না।” এদিকে বসে নেই বিজেপি। পাহাড় বিজেপির সভাপতি কল্যাণ দেওয়ান বলেন, “প্রার্থীকে বলা হয়েছে সমতলে বেশি সময় দিতে। পাহাড়ে বিজেপি, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা এবং জিএনএলএফ সম্মিলিতভাবে প্রচার চলছে।” মাটিগাড়া-নকশাবাড়ির বিজেপি বিধায়ক আনন্দময় বর্মন, “সমতলে জোরদার প্রচার শুরু হয়েছে। প্রার্থী প্রতিটি ব্লকে প্রচার করছেন। ভালো সাড়া মিলছে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement