Advertisement
Advertisement

Breaking News

PUBG

PUBG’র নেশায় হাড় জিরজিরে দশা, অসুস্থ ছেলেকে রিহ্যাব সেন্টারে পাঠালেন মা-বাবা

মহালয়ার আগে শেষবার স্নান করেছিল মোবাইল গেম আসক্ত কিশোর।

Alipurduar: Parents sent PUBG addict son to rehab centre
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:October 18, 2019 10:53 am
  • Updated:October 18, 2019 10:54 am  

রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: হাড় জিরজিরে শরীরের ছেলেটাকে দেখে চেনা দায় ছিল। পাঁচ-ছয়দিন পরপর খাবার খেত বছর ষোলোর কিশোর। মহালয়ার আগের দিন যে স্নান করেছিল সেই শেষ। তারপর আর গায়ে জলও ঢালেনি। বন্ধ ঘরেই থাকতে ভালবাসত সে। ছেলের হলটা কী? আসলে মোবাইল গেম PUBG-তে আসক্ত হয়ে পড়েছিল সে। আর তাতেই ছেলের এই দশা দেখে আতঙ্কিত মা-বাবা কিশোরকে পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠালেন। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি আলিপুরদুয়ার মহকুমার।

PUBG আসক্ত ছেলের হাতে খুন হয়েছিলেন বাবা। সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে কর্নাটকের সেই ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল গোটা দেশ। এবার PUBG আসক্ত কিশোরের সন্ধান মিলল এই রাজ্যেও। আলিপুরদুয়ারের এক ১৬ বছরের কিশোর এই খেলায় আসক্ত হয়ে পড়েছে। সেই মোবাইল গেমের আসক্তি থেকে ছেলেকে সারিয়ে তুলতে বুধবারই একমাত্র ছেলেকে পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠিয়েছে আলিপুরদুয়ার জংশনের এক দম্পতি। কোচবিহার জেলার খাগরাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ডোডেয়ারহাট এলাকায় কোচবিহার ফেইথ ফাউন্ডেশনের পুনর্বাসন কেন্দ্রে রয়েছে ১৬ বছরের ওই কিশোর। এই ফাউন্ডেশনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ দে বলেন, “হার জিরজিরে চেহারা হয়ে গেছে ছেলেটির। শুনেছি পাচ ছয়দিন পরপর খেত ছেলেটি। শুধু ঘরে শুয়ে মোবাইলে PUBG গেম খেলত। ছেলেটির খাওয়া দাওয়া শুরু করাই আমাদের কাছে প্রধান চ্যালেঞ্জ। তবে বুধবার রাতে ও সামান্য খেয়েছে। আশা করছি সমাজের মুল স্রোতে ফিরবে ও।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: দিওয়ালির আগেই ধামাকা, আকর্ষণীয় ডেটা অফার ঘোষণা ভোডাফোনের]

আলিপুরদুয়ার শহর লাগোয়া লিচুতলা এলাকার একটি ফ্ল্যাটের বাসিন্দা ওই কিশোরের বাবা রেলের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। মাও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী। একমাত্র ছেলের এই দশায় দিশেহারা দুই জন। কিশোরের বাবা বলেন, “কর্নাটকে PUBG আসক্ত ছেলের হাতে বাবার খুনের ঘটনার পর আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। আমাদের তেমন লোকবল নেই। আমরা এলাকার সমাজ সেবার কাজের সঙ্গে যুক্ত একজনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তাঁর সহায়তায় তাকে অবশেষে পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। ছেলে কোনও চিকিৎসকের কাছে যেতে চাইত না। একবার চিকিৎসকের কাছে নিয়েও গিয়েছিলাম, কিন্তু ওষুধ খায় না। শুধু অন্ধকার ঘরে মোবাইলে গেম খেলে। ভয়ে সবসময় মোবাইল রিচার্জের টাকা দিয়ে দিতাম।” জানা গিয়েছে, ছেলেটি বন্ধ ঘরে থাকতে ভালবাসত। দিনের আলো দেখতে পছন্দ করত না। খাওয়া দাওয়ার কোন টাইম টেবিল ছিল না। চার পাঁচ দিন পরপর কখন খুব ভোরে আবার রাতে সামান্য খাবার খেত। মহালয়ার আগের দিন শেষবার স্নান করেছিল। তার পর আর স্নান করেনি।

প্রায় এক বছরের বেশি সময় থেকে PUBG খেলায় আসক্ত হয়ে পড়ে ১৬ বছরের এই কিশোর। ছেলেকে ভালবেসে মোবাইল কিনে দিয়েছিলেন দম্পতি। কিন্তু ছেলে আসক্ত হয়ে পড়বে তা ভাবতেও পারেননি তাঁরা। কোচবিহারের একটি বেসরকারি স্কুল থেকে নব্বই শতাংশ নম্বর নিয়ে মাধ্যমিক পাশও করে। কিন্তু তার পরেই মোবাইল গেমে আসক্ত হয়ে সব লাটে ওঠে। মাধ্যমিকে নব্বই শতাংশ নম্বর পাওয়া ছেলে একাদশ শ্রেণিতে অঙ্কে ফেল করে যায়। কলকাতা-সহ জেলার একাধিক স্কুলে ভরতি করেও ছেলেকে স্কুলে পাঠাতে পারেননি বাবা-মা। আলিপুরদুয়ার জংশনের সমাজকর্মী বিকাশ ভৌমিক বলেন, “আমরা খবর পাওয়ার পর ছেলেটিকে দেখতে যাই। অনেক চেষ্টা করি ছেলেটিকে এই খেলা থেকে বের করার। কিন্তু পারিনি। সম্প্রতি বাড়িতে মোবাইল নেটওয়ার্কের ওয়াই ফাই কানেকশন সেট করার জেদ করছিল। সম্ভবত বাইরে আর মোবাইল রিচার্জ করতে যেতে চাইছিল না ও। অবশেষে বুধবার রাতে কোচবিহারের রিহ্যাব সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।”

[আরও পড়ুন: চন্দ্রযানের তোলা চাঁদের প্রথম উজ্জ্বল ছবি প্রকাশ করল ইসরো]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement