পরিবারের সঙ্গে আলিপুরদুয়ারের তন্ময়।
রাজকুমার কর্মকার, আলিপুরদুয়ার: সবে পহেলগাঁওে উঠেছিলেন। যাওয়ার কথা ছিল বৈসারনে। তখনই হই হট্টগোল। জল ছবির মতো সুন্দর বৈসরানে পর্যটকদের উপর হামলা চালায় জঙ্গিরা। একথা জানিয়ে বাইরে বেরতে নিষেধ করে দেয় হোটেলের কর্মী। রাত কাটে কার্যত হোটেল বন্দি হয়েই। আতঙ্ক কাটিয়ে কোনওমতে শ্রীনগর ফিরে আসেন আলিপুরদুয়ারে তন্ময়। সঙ্গে স্ত্রী, বাবা-মা। তবে এখন ফিরে আসাটাই তাঁদের কাছে চ্যালেঞ্জ। রাস্তায় ধস নেমেছে। ঘুরপথে জম্মু আসতে হচ্ছে। রবিবার দিল্লি থেকে ফেরার ট্রেন। তাঁরা ফিরে না আসা পর্যন্ত চিন্তায় পরিজনেরা।
আলিপুরদুয়ারের নেতাজী রোডের মধ্যপাড়ার বাসিন্দা সাগর চক্রবর্তী। পেশায় অপটোমিটারিস্ট সাগর স্ত্রী, বাবা-মাকে নিয়ে ১৫ এপ্রিল কাশ্মীরে যান। ১৭ এপ্রিল শ্রীনগরে পৌঁছন। সেখান থেকে মঙ্গলবার পহেলগাঁওতে যান।
বৈসারন থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে দুপুর ২টোর দিকে ওঠেন হোটেলে। সেখানেই জঙ্গি হামলার খবর পান। হোটেল কর্মীদের বারনে প্রাণ বাঁচে তাঁদের। স্বাভাবিকভাবেই ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। শ্রীনগরে ফিরেও আসেন। সেখানেই রয়েছেন তাঁরা। তন্ময় বলেন, “শ্রীনগর ফেরার সময় সকলেই আমাদের সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু রাস্তায় নতুন বিপদ ছিল ধস। তবে নিরাপদেই পৌঁছেছি।” এখন মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, রাস্তায় ধস। তন্ময় ফোনে জানাচ্ছিলেন, “অনেকটা ঘুর পথে ফিরতে হচ্ছে। শ্রীনগর থেকে জম্বু যাওয়াটা চ্যালেঞ্জ। রবিবার দিল্লি থেকে রাজধানী এক্সপ্রেসে ফেরার কথা। দেখা যাক কী হয়।”
এই ঘটনাকে কী ভাবে দেখছেন প্রশ্ন করতেই তন্ময়ের মত, “পর্যটকদের উপর এমন ঘটনা আগে কোনও শুনিনি। এই ঘটনার জন্য কাশ্মীরের পর্যটন মার খাবে। এখানকার মানুষরা পর্যটকদের ভগবানের মত দেখেন। এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তবুও এমন ঘটনা ঘটে গেল। মন খুবই ভারাক্রান্ত।” আলিপুরদুয়ারের এই পরিবারের কিছুটা স্বস্তিতে থাকলেও অনেক সহ নাগরিককে হারিয়ে তন্ময় বলেন, “কোনও কিছুই ভালো লাগছে না। আমরা সুস্থ অবস্থায় ফিরতে পারছি। আমাদের মতো অনেকে ফিরতে পারল না। এদিকে তাঁরা বাড়িতে না আসা পর্যন্ত চিন্তা মুক্ত হতে পারছে না তন্ময়দের পরিজনেরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.