অর্ণব আইচ: ব্রিটিশ আমলের আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের থেকেও এর নিরাপত্তা অনেক জোরালো। ভিতরে জায়গা অনেক বেশি। সত্যিই যাতে বন্দিরা সংশোধিত হয়, সেই প্রচেষ্টা রাজ্য সরকারের। বারুইপুরের টংতলায় তৈরি হয়েছে আধুনিক সংশোধনাগার। আজ বুধবার নবান্ন থেকে রিমোট কন্ট্রোলে বারুইপুর জেলের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বারুইপুরে সেই সময় উপস্থিত থাকবেন রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। থাকবেন কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাসও। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী কামালগাজিতে নরেন্দ্রপুর থানা ও জয়নগরে বকুলতলা থানা উদ্বোধন করবেন। নরেন্দ্রপুরে বিধায়ক ফিরদৌসি বেগম ও বকুলতলায় বিধায়ক বিশ্বনাথ দাস উপস্থিত থাকবেন।
কারা সূত্রে জানা গিয়েছে, আলিপুর সেন্ট্রাল জেল থেকে বন্দিদের সরিয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে বারুইপুর জেলে। আলিপুরের যে বন্দিরা কলের পাইপ ও মিস্ত্রির কাজ জানে, তারা গিয়ে ইতিমধ্যেই জেল ঘুরে দেখে এসেছে। প্রথম দফায় মোট ৫০ জন সাজাপ্রাপ্ত বন্দিকে আলিপুর থেকে বারুইপুরে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। সাধারণভাবে আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে ১৮০০ বিচারাধীন ও সাজাপ্রাপ্ত বন্দির থাকার জায়গা রয়েছে। সেই জায়গায় বারুইপুর জেলে ২২০০ বন্দি সহজেই থাকতে পারবে। যদিও প্রথমে ৮৫০ জন বন্দিকে বারুইপুর জেলে রাখা হবে। আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে বাকি বন্দিদের ওই নতুন জেলে স্থানান্তরিত করা হবে। আলিপুরের মতো এই জেলেও যেমন ওয়ার্ড থাকছে, তেমনই থাকছে সেল। নিরাপত্তার জন্য বারুইপুর জেলে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কারা দফতরের এক আধিকারিক জানান, আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের পাঁচিল টপকে একাধিকবার বন্দিরা পালিয়েছে।
[গল্প নয়, সত্যি! এক কাপ চা খেলেই মিলবে আইফোন!]
আবার আলিপুর জেলের বাইরে থেকে পাঁচিল টপকিয়ে অনেক সময় কাপড় ও প্লাস্টিকে বেঁধে মাদক ও মোবাইলও পাচার করা হয়। এই বিষয়গুলি মাথায় রেখেই বারুইপুর জেলের পাঁচিলের উচ্চতা ৭.৫ মিটার করা হয়েছে। যেখানে আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের পাঁচিলের উচ্চতা ৬.৫ মিটার। এ ছাড়াও পুরো জেলকে মুড়ে দেওয়া হচ্ছে সিসিটিভি ক্যামেরায়। সারাক্ষণ সিসিটিভির মাধ্যমে নজরদারি চালাবেন কারারক্ষীরা। মঙ্গলবারও আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের এক বন্দির কাছ থেকে গাঁজা ও মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বারুইপুর জেলে যাতে নিষিদ্ধ বস্তু পাচার না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর থাকছে কারা দপ্তরের। যা যা জেলের জিনিস ভিতরে যাবে, এক্স রে-র মাধ্যমে তা পরীক্ষা করার ব্যবস্থা থাকছে। জেলের ভিতর বন্দিরা যাতে আরও সুবিধা পায়, তার জন্য খোলামেলা জায়গা থাকছে বেশি। জেলের ঘেরাটোপে বন্দিদের ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ বেশি থাকছে। এ ছাড়াও থাকছে ফুটবলের মাঠ, ভলিবল ও ব্যাডমিন্টন খেলার জায়গা। বন্দিদের পড়াশোনার জন্য থাকছে বড় লাইব্রেরি। থাকছে বিশাল কনফারেন্স রুমও। আবার জেলের মধ্যে যাতে বিভিন্ন ধরনের ওয়ার্কশপ চালানো যায় ও তাতে যাতে বন্দিরা অংশগ্রহণ করতে পারেন, সেই ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে বলা জানিয়েছে কারা দপ্তর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.