প্রতীকী ছবি।
অর্ণব আইচ ও অরিজিৎ গুপ্ত: রাজ্যের একাধিক জায়গায় নতুন মডিউল তৈরির ছক কষেছিল আল কায়দা। ভারতীয় আল কায়দা (Al Qaeda) তথা ‘আকিস’এর দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করার পর এই ব্যাপারে তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা। ধৃতদের মোবাইল ও ল্যাপটপ ঘেঁটে রাজ্য পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) আধিকারিকরা ‘আকিস’এর আরও অন্তত ১৭ জন সদস্যকে শনাক্ত করেছেন।
সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার শাসন এলাকা থেকে আব্দুর রাকিব সরকার ওরফে হাবিবুল্লাহ ওরফে হাবিব ও কাজি আহাসানউল্লা নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ। আহাসানউল্লাকে জেরা করে আগেই পূর্ব কলকাতার তপসিয়ায় তার একটি ডেরার সন্ধান মেলে। এবার হাওড়ার বাঁকড়ার নয়াবাজ রসিকল এলাকায় তার নতুন ডেরার সন্ধান পেল রাজ্য এসটিএফ। এই এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকত আহাসানউল্লা। রবিবার তাকে সঙ্গে নিয়েই ওই বাড়িটিতে তল্লাশি চালান গোয়েন্দারা। এখান থেকেই নানা তথ্য সংগ্রহ করে নিয়ে যান এসটিএফের আধিকারিকরা। পুলিশ জেনেছে, নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করায় কাজি আহাসানউল্লাকে মেনে নেয়নি তার পরিবার। তাই বছর তিনেক আগেই আরামবাগের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় সে। বাড়ির সঙ্গে সেরকম সম্পর্ক ছিল না তার। দীর্ঘদিন বাড়িতে আসত না। মাঝে মাঝে বাড়িতে এলেও সকালে বেরিয়ে রাতে বাড়ি ফিরত। সেইসময় আরামবাগের বাড়িতে না গিয়ে আহাসানউল্লা বাঁকড়ার নয়াবাজে ভাড়া বাড়িতে গিয়ে থাকত।
প্রথমে একটি সাধারণ চাকরি করলেও পরে দর্জির কাজ নেয়। ইদের সময় গত ১০ জুলাই শেষবার আরামবাগের বাড়িতে গিয়ে তিন দিন ছুটি কাটিয়েছিল আহাসানউল্লা। তার পরই এসটিএফের জালে পড়ে সে। বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠনের কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে এই সন্দেহে গত জুন মাসে বাঁকড়ারই নয়াবাজ এলাকা থেকে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছিল হাওড়া সিটি পুলিশ। তখনও পুলিশের তরফে জানানো হয়েছিল ধৃতরা বাঁকড়ার নয়াবাজ রসিকল এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকত। বাঁকড়ায় জঙ্গি সন্দেহে ধরা পড়া সেই পাঁচজনের সঙ্গে আহাসানউল্লার কোনও যোগ আছে কি না বা ওই একই বাড়িতে তারা থাকত কি না, তা খতিয়ে দেখছেন এসটিএফ আধিকারিকরা।
এর আগে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ আধিকারিকরা তদন্ত করে জানতে পারেন যে, জামাত-উল-মুজাহিদিন (জেএমবি) উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারে নতুন মডিউল তৈরির ছক কষেছে। সেই ছক ভেঙে ফেলেন গোয়েন্দারা। এবার আব্দুর রাকিবের হাত ধরে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গদারামপুরের আউসা এলাকায় নতুন মডিউল তৈরির ছক কষা হচ্ছিল বলেই ধারণা গোয়েন্দাদের।
এ ছাড়াও কলকাতা বা হাওড়া, এমনকী, উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত এলাকার কোথাও ভারতীয় আল কায়দা নতুন করে মডিউল তৈরির ছক কষছিল, এমন সন্দেহও গোয়েন্দারা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। তবে আউসা-সহ বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় আকিস যে স্লিপার সেল তৈরি করতে শুরু করেছিল, সেই ব্যাপারে গোয়েন্দারা অনেকটাই নিশ্চিত। তার জন্য নিয়োগপ্রক্রিয়াও শুরু করেছিল ‘আকিস’। এই জঙ্গি মডিউলের বাকি সদস্যদের ধরতে পারলে এই ব্যাপারে আরও বহু তথ্য হাতে আসবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.