Advertisement
Advertisement

জয়শ্রীর সঙ্গে সম্পর্কের কথা জেনে ফেলাতেই খুন হন আকাঙক্ষা

নিজের ত্রিকোণ প্রেমের কথা লোকাতেই খুনের ছক উদয়নের৷

Akansha got to know about Jayashree which perhaps cause her fatal death
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:February 9, 2017 8:50 am
  • Updated:February 10, 2017 11:43 am  

স্টাফ রিপোর্টার, কলকাতা ও বাঁকুড়া: উদয়ন-কাণ্ডে জল যত গড়াচ্ছে, তত রঙিন হয়ে খুলছে তার রহস্যের জট৷ বাঁকুড়ার সেফ হাউসে টানা ছ ঘণ্টা পুলিশি জেরার মুখে উদয়ন লিখেছে জয়শ্রীর নাম! কে এই জয়শ্রী?

পুলিশ মনে করছে, তার ছেলেবেলার বন্ধু এই জয়শ্রীর সঙ্গে উদয়নের সম্পর্ক জেনে ফেলার কারণেই খুন হতে হয়েছে আকাঙক্ষা৷ তাঁর বিরুদ্ধে ত্রিকোণ প্রেমের তত্ত্ব প্রমাণের চেষ্টায় ছক কষে তাকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিল উদয়ন৷ জয়শ্রীর বাড়ি ভোপালে৷ উদয়নের মায়ের অধীনে কাজ করতেন জয়শ্রীর মা৷ উদয়ন ও জয়শ্রী, দু’জনেই তখন অনেক ছোট৷ দু’জনের আলাপ সেই তবে থেকে৷ পুলিশের অনুমান, এই জয়শ্রীর সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল উদয়নের৷ যাকে আড়াল করতেই আকাঙক্ষার বিরুদ্ধে ত্রিকোণ প্রেমের তত্ত্ব খাড়া করেছিল উদয়ন৷ সেই রহস্যের জট খুলতেই আরও একবার ভোপাল যাচ্ছে বাঁকুড়া পুলিশ৷ সেখানে জয়শ্রীর খোঁজ করার পাশাপাশি উদয়ন সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে ভোপালে বসবাসকারী তার তিন মামা ও মাসির সঙ্গেও কথা বলবে পুলিশ৷ পুলিশ মনে করছে, জয়শ্রীর খোঁজ পেলে এই তদন্ত অনেকটাই গতি পাবে৷

Advertisement

জানা গিয়েছে, রাজস্থান ও মুম্বইয়ের যে দুই যুবকের সঙ্গে আকাঙক্ষার প্রেমের সম্পর্কের তত্ত্ব খাড়া করেছে উদয়ন, তা সর্বৈব মিথ্যা৷ কারণ আকাঙক্ষা খুনের আগে ওই দুই যুবকের কারও সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না তাঁর৷ আকাঙ্ক্ষার কললিস্ট ঘেঁটে সেই তথ্যই সামনে এসেছে৷ জানা গিয়েছে, আকাঙক্ষার মৃত্যুর পর তাঁর নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপ করে যোগাযোগ করা হয় দুই যুবকের সঙ্গে৷ এখান থেকেই পরিষ্কার যে, উদয়ন ঘটনার মোড় ঘোরাতে চাইছিল৷ আকাঙক্ষার বিরুদ্ধে ত্রিকোণ প্রেমের মিথ্যা তত্ত্ব প্রমাণ করতে চাইছিল৷

(খাবার নিয়ে বায়নাক্কা জারি ‘সাইকো’ উদয়নের)

গত কয়েকদিনে টানা জেরা শুধু নয়, উদয়নের খুনের ধরন, তার বাড়ির ভিতরের পরিবেশ, তার মানসিক পরিস্থিতি সব কিছু খতিয়ে দেখে পুলিশ জানিয়েছিল, উদয়নের মানসিক পরিস্থিতি ঠিক নেই৷ আরও ভাল করে বললে বলতে হয়, নিজের সঙ্গে নিজে সে একটি ভারচুয়াল দুনিয়া তৈরি করে নিয়েছিল৷ সেখানেই নিজের সঙ্গে নিজেই সে বন্ধুত্ব পাতায়৷ এই পরিস্থিতিতে সোজা পথের জেরায় সঠিক তথ্য না-ও মিলতে পারে৷ তাই উদয়নকে জেরার অন্য পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়৷ তার ভারচুয়াল দুনিয়ার সামনে বসানো হয় তাকে৷

আশেপাশে স্থির একটি পরিস্থিতি তৈরি করে তাকে প্রথমে বলা হয় নিজের আত্মীয়দের নাম লিখে জানাতে৷ টানা ছ ঘণ্টার জেরায় এর পরই তাকে তার বান্ধবীদের নাম লিখতে বলা হয়৷ সেই পরিস্থিতিতেই সুতো আলগা হয় উদয়নের মানসিক অবস্থার৷ খাতায় উঠে আসে জয়শ্রীর নাম৷ জয়শ্রীর পদবি জানাতে না পারলেও তার সঙ্গে যে উদয়নের ছোটবেলা থেকেই পরিচয়, সে কথা জানায় উদয়ন৷ উদয়নের মা রাশিবিজ্ঞানের গবেষক ও শিক্ষিকা ছিলেন৷ তাঁর অধীনে কর্মরত ছিলেন জয়শ্রীর মা৷ সেখান থেকে জয়শ্রীর সঙ্গে উদয়নের আলাপের শুরু হলেও দ্বাদশ শ্রেণির পর উদয়ন পড়াশোনা ছেড়ে দিলে, জয়শ্রীর সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক ছিল না বলে জেরায় পুলিশকে জানিয়েছে সে৷ যদিও তার সত্যতা যাচাই হয়নি৷ সেই সূত্রেই ভোপালে গিয়ে জয়শ্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের তোড়জোড় শুরু হয়েছে৷

(বিধানসভায় নজিরবিহীন গণ্ডগোল, সাসপেন্ড বিরোধী দলনেতা)

শুধু জয়শ্রীই নয়, ভোপালে কী পরিস্থিতিতে উদয়ন বেড়ে উঠেছে, তা জানতে চায় পুলিশ৷ তবেই তার মানসিক গঠন সম্পর্কে অনেকটা স্থির ধারণা করা সম্ভব হবে৷ পুলিশ সূত্রে খবর, ইংরেজি থ্রিলার বা ভয়ের ছবি দেখা খুব পছন্দ ছিল উদয়নের৷ শুধু ইংরাজি নয়, সেগুলি হতে হবে আমেরিকান ছবি৷ অর্থাৎ আরও একবার আমেরিকার সূত্র৷ প্রথম থেকেই খুনের ঘটনা সামনে আসতেই যেভাবে উদয়ন বারবার আমেরিকার কথা সামনে আনছিল৷ কেন উদয়নের সঙ্গে বারবার আমেরিকার সূত্র জড়াচ্ছে, তা জানতেই ভোপালে তার মামা ও মাসির সঙ্গে কথা বলবে পুলিশ৷ একইসঙ্গে তার দুই কাকার সঙ্গেও কথা বলবে বাঁকুড়া পুলিশ বলে জানা গিয়েছে৷ তাঁদের বাড়ি সল্টলেক ও হাওড়ায়৷ ভোপালে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি তদন্তে তাই হাওড়া ও সল্টলেকেও উদয়নের কাকাদের বাড়ি পুলিশ যাবে বলে জানিয়েছে৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement