সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: মেয়ের ‘বিপদ’ বাড়ছে। যে মেয়ের মাথা ফেটে গেল, তার বিরুদ্ধেই কি না এফআইআর দায়ের! এই খবর কানে পৌঁছনোর পর থেকে কিছুতেই যেন চিন্তামুক্ত হতে পারছেন না জেএনইউ ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষের মা। তিনি স্পষ্টই উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছেন, মেয়েকে হস্টেলে রাখার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করতে হচ্ছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেএনইউ-তে হামলার প্রতিবাদে দুর্গাপুরের মিছিলে হাঁটেন তাঁর মা শর্মিষ্ঠা ঘোষ।
আগাগোড়া বামপন্থায় বিশ্বাসী মেধাবী মেয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে স্নাতকোত্তর পড়ছে। সেইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সভানেত্রী। অনেক দায়িত্ব তার। মেয়ের এই সাফল্যে গর্ববোধ করতেন ঐশীর মা,বাবা। কিন্তু রবিবার সন্ধের পর পরিস্থিতি যেন আচমকাই অন্য দিকে মোড় নিল। প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার দূরে দুর্গাপুরে বসে টেলিভিশনের মাথা ফেটে যাওয়া মেয়ের ছবি দেখতে দেখতে শিউড়ে উঠেছিলেন শর্মিষ্ঠা দেবী। তবু মনের সমস্ত শক্তি জড়ো করে আস্থা রেখেছিলেন লড়াকু মেয়ের প্রতি। কিন্তু এফআইআরের কথা শুনে চিন্তিত হয়ে পড়েন।
তাহলে কি মেয়ে আর জেএনইউ-তে নিরাপদ নয় বলে মনে করছেন? শর্মিষ্ঠাদেবীর কাছে এই ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি সাফ জানান, “আমরা মেয়েকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না।তিনদিন ধরে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েই আমাদের সময় পার হয়ে যাচ্ছে।” এরপরই তিনি বলেন, “অভিভাবক হিসেবে মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবনা আমাদের দায়িত্ব। আমরা কয়েকদিন সময় চাইছি মেয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে। আমাদের সেই সময় দেওয়া হোক।’’ তবে কি ঐশীর জেএনইউ-এর দিন শেষ হয়ে এল? এই প্রশ্নের উত্তর এখনই ঠিকমতো না পাওয়া গেলেও তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় কার্যত বেশ চাপেই পরিবারের সদস্যরা।
চাপ আছে আরও। সম্প্রতি ঐশীর বাবা দেবাশিস ঘোষ কেন্দ্রীয় সংস্থা ডিভিসির অফিসার হয়েছেন। চলতি বছরেই অবসর নেবেন তিনি। কেন্দ্রের শাসকদলের সঙ্গে লড়াইয়ে নেমেছে মেয়ে। শাসকদলও কোমর বেঁধেই লড়াই করছে। এই অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা বিভ্রান্ত ঐশীর পরিবার। তবে মেয়ের বিরুদ্ধে এফআইআর নিয়ে এদিন আর কিছুই বলতে চাননি দেবাশিসবাবু।
শুনুন শর্মিষ্ঠা ঘোষের বক্তব্য:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.