জ্যোতির্ময় চক্রবর্তী, বনগাঁ: তিন দশকের ছায়াসঙ্গী। মতুয়াদের বড়মার মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন পঁয়ষট্টি বছরের মিনতি মণ্ডল। শেষ কয়েক বছর গাইঘাটার ঠাকুরবাড়িতে বীণাপাণিদেবীকে দেখভাল করতেন তিনি।
[ দফায় দফায় বৈঠকে কাটল জটিলতা, আগামিকাল বড়মার অন্ত্যেষ্টি]
মিনতিদেবীর বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর সরবেড়িয়ায়। নয়ের দশকে গাইঘাটার ঠাকুরবাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন, আর ফেরেননি। মতুয়াদের ঠাকুরবাড়িতেই থেকে যান মিনতিদেবী। তখন বড়মা বীণাপাণিদেবী যথেষ্ট শক্তসমর্থ ছিলেন। তাই আলাদা করে তাঁকে দেখভাল করার প্রয়োজনও ছিল না। তবে ঠাকুরবাড়ির অন্য কাজের ফাঁকে বড়মারও খেয়াল রাখতেন মিনতিদেবী। একে অপরকে ‘মা’ বলে ডাকতেন তাঁরা। বীণাপাণিদেবীর শরীর যখন ক্রমশই খারাপ হতে শুরু করল, তখন তাঁকে দেখভাল করার দায়িত্ব পান মিনতি মণ্ডল।
শেষ কয়েক বছর বড়মা বীণাপাণিদেবী এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন যে, রোজকার কোনও কাজই একা করতে পারতেন না। সবটাই সামলাতে হত মিনতিদেবীকে। প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে তুলে বড়মার হাত-মুখ ধুইয়ে দিতেন তিনি। দুপুরে স্নান, সময় সময় ওষুধ দেওয়াও ছিল নিত্যদিনের কাজ। ঠাকুরবাড়ির সদস্যরা জানিয়েছেন, বড়মার কখন কী প্রয়োজন, তা সহজেই বুঝতে পারতেন মিনতিদেবী। এমনকী, বীণাপাণিদেবীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ওষুধপত্র তাঁকেই বুঝিয়ে দিতে যেতেন গাইঘাটা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকরা। বৃহস্পতিবার বিকেলে বাড়িতেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বীণাপাণিদেবী। প্রথমে কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতাল, পরে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভরতি ছিলেন তিনি। যে ক’দিন হাসপাতালে ভরতি ছিলেন শতায়ু বড়মা, সে ক’দিন দুঃশ্চিন্তায় দু’চোখের পাতা এক করতে পারেননি মিনতিদেবী। থমথমে ছিল গাইঘাটার ঠাকুরবাড়ির পরিবেশও। শেষপর্যন্ত মঙ্গলবার রাতে এল দুঃসংবাদ। মিনতিদেবীর আক্ষেপ, ‘এবার আর হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরতে পারলেন না মা!’
[ শেষযাত্রায় বড়মা, শ্রদ্ধা জানাতে অগণিত ভক্তের ঢল]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.