শেখর চন্দ্র, আসানসোল: ময়নাগুড়িতে ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন রেলকর্মী অজিত প্রসাদ। তাঁরই বাড়ি গেলেন আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল। শোকোস্তব্ধ পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি। পাশাপাশি জানান রেলে চাকরি পাবেন মৃতের স্ত্রী। ৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে মৃতের পরিবারকে। গতকাল রাতে আসানসোলের রাধানগর রোড তালপুকুরিয়ার বাড়িতে যান অগ্নিমিত্রা।
উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ির দোমোহনিতে বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হওয়া যাত্রীদের মধ্যে রয়েছেন এক রেলকর্মীও। অজিত প্রসাদ (৩৩) নামে মৃত ওই রেলকর্মীর বাড়ি হীরাপুর থানার বার্ণপুরের রাধানগর রোডের তালপুকুরিয়া এলাকায়। ২০১৬ সালে, ৬ বছর আগে অজিত প্রসাদ রেলে চাকরি পেয়েছিলেন। অসমের রেলে চাকরি করতেন তিনি। ঘটনার আকস্মিকতায় প্রসাদ পরিবারের সদস্যরা শোকস্তব্ধ হয়ে যান। এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। বাড়ির লোকজন শুক্রবারই মৃতদেহ আনতে যান ময়নাগুড়িতে।
গত বছর ২৬ এপ্রিল বিয়ে হয়েছিল অজিত প্রসাদের। অজিতের মৃত্যুর কথা স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর স্ত্রীকে শুক্রবার জানানো হয়নি। স্ত্রী এখন রয়েছেন বাপের বাড়িতে। রেলের ট্র্যাক মেনটেনার পদে চাকরি পাওয়া অজিত বর্তমানে উত্তরবঙ্গের মালেগাঁও ডিভিশনে গেটম্যান হিসাবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে, এমন আশঙ্কার কথা জানার পর বৃহস্পতিবার রাতেই জলপাইগুড়ির উদ্দেশে রওনা দেন দাদা সুজিত প্রসাদ ও ছোট ভাই অমরজিৎ প্রসাদ। অজিতের কাকা বাবন প্রসাদ বলেন, ওখানে দুই ভাইপো অজিতের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পরে হাতে পেয়েছে। ওরা মৃতদেহ নিয়ে বাড়ি ফিরছে।
তিনি আরও বলেন, “হীরাপুর থানা, জেলা প্রশাসন বা এখানকার রেলের তরফে আমাদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি। অজিতের সহকর্মীরা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার সময় আমাদের ফোন করে বলে যে, সে ট্রেনে আসছিল। আমরা সঙ্গে সঙ্গে অজিতের ফোনে যোগাযোগ করি। প্রথমে রিং হয়ে গেলেও কেউ ফোন তোলেনি। পরে ফোন বন্ধ হয়ে যায়। তখন আমাদের আশঙ্কা বেড়ে যায়। রাতেই অজিতের দাদা ও ভাই সেখানে যাওয়ার জন্য বেরিয়ে পড়ে।” প্রসাদ পরিবারের সদস্য ও তার বন্ধুরা জানেন না, ওই ট্রেনে কোথা থেকে অজিত ফিরছিল। কোথায় গিয়েছিলেন তিনি। তবে তাঁরা তাঁর সহকর্মীদের থেকে জেনেছেন, অজিত জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে গুয়াহাটিগামী বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনে চেপেছিলেন।
প্রসঙ্গত, শুক্রবারই রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণোর মন্তব্যে ইঙ্গিত মেলে যে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই এত বড় ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে। যদিও সরকারি ভাবে এখনও পর্যন্ত দুর্ঘটনার কারণ ব্যাখ্যা করা হয়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.