জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: আমফান তছনছ করে দিয়ে গিয়েছে অনেক কিছুই। তার টাটকা ক্ষত বুকে নিয়েই বুধবার সন্ধেবেলা কালবৈশাখী তাণ্ডব দেখিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার উপকূল এলাকায়। উড়ে গিয়েছে মাথার ছাদ। একটুকরো ত্রিপল জোগাড়ের জন্য সকাল থেকে লাইন দিয়ে অপেক্ষা করে করে ধৈর্যের বাঁধ ভাঙল গ্রামবাসীদের। বাগদা থানার সিন্দ্রাণী গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের অভিযোগ, তালা ভেঙে অন্তত ৫০০ ত্রিপল লুট করলেন বিক্ষুব্ধ জনতা। এ নিয়ে বাগদা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ।
বাগদা থানা এলাকার সিন্দ্রাণী গ্রাম পঞ্চায়েত বিজেপি পরিচালিত। অভিযোগ, আমফানে এখানকার অধিকাংশ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও, পুনর্বাসন বা ত্রাণবণ্টনের কাজ ঠিকমতো করছিল না পঞ্চায়েত। তাতে গ্রামবাসীদের মনে ক্ষোভ দানা বাঁধছিল। তার মধ্যে বুধবার সন্ধেবেলা ফের কালবৈশাখীতে আরেকপ্রস্ত বিপর্যয়ের মুখে পড়েন তাঁরা। এরই মধ্যে খবর রটে যায়, আজ সকালে পঞ্চায়েত থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রিপল দেওয়া হবে। সেইমতো এদিন সকালে ত্রিপল নিতে পঞ্চায়েত অফিসের সামনে দীর্ঘ লাইন দেখা যায় স্থানীয় বাসিন্দাদের। শিকেয় ওঠে সামাজিক দূরত্ব। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়ানোর পরও পঞ্চায়েত অফিস তালাবন্ধ দেখে আর ধৈর্য রাখতে পারেননি তাঁরা।
সোজা পঞ্চায়েত অফিসের তালা ভেঙে ত্রিপলগুলি লুট করতে শুরু করেন তাঁরা। অফিসে মজুত ছিল প্রায় ৭০০ টি ত্রিপল। তার মধ্যে ৫০০ টি ত্রিপলই ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায় গ্রামবাসীদের একাংশ, অভিযোগ পঞ্চায়েত প্রধানের। তুমুল বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় এলাকায়। বাগদা থানায় খবর পৌঁছায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এ নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান লতিকা মণ্ডলের অভিযোগ, ”ত্রিপল বণ্টনের আগে আমরা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করছিলাম। কাদের দেওয়া হবে, কত পরিমাণ দেওয়া হবে – এসব নিয়ে। কিন্তু তারই মধ্যে ওরা অফিসের তালা ভেঙে ত্রিপলগুলো লুট করে নিয়ে যায়। থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হবে। ” সিন্দ্রাণী গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য সৌমেন ঘোষের অভিযোগ, ”মানুষ দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে আর ধৈর্য রাখতে পারেনি। পঞ্চায়েত অফিসও সময়মতো খোলা হয়নি। প্রধানও দেরি করেছেন আসতে। এসবের কারণেই এমন লুটপাটের ঘটনা ঘটল। মানুষের ক্ষোভের বহিপ্রকাশই এই ঘটনা।” তবে ত্রিপল নিতে এসে সামাজিক দূরত্ব এখানে যে একেবারেই বজায় রাখেননি স্থানীয় মানুষজন, তা নিয়ে কড়া পদক্ষেপ নিতে পারে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.