Advertisement
Advertisement

দেড় বছর পর মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে ফিরে পেল হতদরিদ্র পরিবার

পুলিশকে কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেননি দুঃস্থ পরিবারটি৷

After one and a half years, the family gets back to his son
Published by: Kumaresh Halder
  • Posted:September 15, 2018 9:19 pm
  • Updated:September 16, 2018 12:00 am  

সোমনাথ পাল, বনগাঁ: বছর দেড়েক আগে দিদির বাড়ি যাওয়ার জন্য ঘর ছেড়েছিল মানসিক ভারসাম্যহীন সুদীপ্ত৷ তারপর কেটে গিয়েছে দেড় বছর৷ চার মেয়ের পিঠে এক মাত্র পুত্র সন্তানের চিন্তায় দু’চোখের পাতা কখনও এক করতে পারেনি পরিবার৷ যতই সে মানসিক ভারসাম্যহীন হোক, তবুও তো নিজের সন্তান বলে কথা৷ চোখে-মুখে একরাশ ভয় আর বেদনা নিয়ে তবুও দাঁতে-দাঁত চেপে দেড়টা বছর লড়াই করেছেন শারীরিকভাবে পিছিয়ে থাকা ভ্যানচালকের পরিবার৷ অবশেষে দেড় বছর পর পুলিশ বাবুদের কাছ থেকে ফোন পেয়ে ছেলে হারানোর যন্ত্রণা লাঘব পরিবারের৷

[জেলায় জেলায় বিশ্বকর্মা: শিল্পীর হাতযশে ডিমের খোসায় ফুটে উঠছেন মনীষীরা]

বনগাঁ মহকুমার পেট্রাপোল থানার সীমান্ত লাগোয়া ছয়ঘড়িয়া গ্রাম৷ ওই গ্রামেরই  মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোর সুদীপ্ত৷ জন্ম থেকেই শরীরে বাসা বেঁধেছে প্রতিবন্ধকতা৷ বাবা পেশায় ভ্যানচালক নির্মল কুণ্ডু৷ চার মেয়ে আর আর এক ছেলেকে নিয়ে অভাবের সংসার৷ পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালান মা অনিতা কুণ্ডু৷ স্থানীয় ও পরিবারের  আত্মীয়দের কাছ থেকে চেয়েচিন্তে চার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন৷ কিন্তু, তার মাঝেই  ঘটল অঘটন৷ ২০১৭ সালের ২ জুন সকালে বাড়িতে কাউকে কিচ্ছু না জানিয়ে মায়ের  জমানো ভাণ্ডার থেকে ৪০ টাকা হাতিয়ে দিদির বাড়ি শান্তিপুরের রওনা দেয় সুদীপ্ত৷ তারপর থেকে আর খোঁজ মেলেনি ওই কিশোরের৷ কোথায় গেলে পাওয়া যাবে সন্তানকে? ছেলেকে নিয়ে পাড়ার লোকেরা কত কথাই না বলেছে৷ তবুও হাল ছাড়েননি মা অনিতা দেবী৷ স্বপ্ন দেখেছেন ছেলেকে ফিরে পাওয়ার৷ দাঁতে-দাঁত চেপে লড়াই করেছেন প্রতি মূহূর্তে৷ কখনও পুলিশ বাবুদের দরজায়, কখনও আবার হাসপাতালে, খেলার মাঠে, মেলার মাঠ কত খোঁজ চলেছে৷ কিন্তু, ফেরেনি সুদীপ্ত৷ ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আশায় ঠাকুরবাড়িতে গিয়ে নীরবে চোখের জল ফেলেছেন মা৷ করেছেন মানত৷

Advertisement

[শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপে কাটছে জট, খুলছে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়]

দিন কয়েক আগে উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগর থানা থেকে ফোন পেয়ে আঁতকে উঠেছিলেন৷ তারপর আর এক মুহূর্ত সময় নষ্ট করেননি৷ ছুটে গিয়েছিলেন থানায়৷ দীর্ঘ দেড় বছর পর নিজের সন্তানকে চিনতে এতটুকুও ভুল হয়নি, মা অনিতাদেবীর৷ হারানো ছেলে সুদীপ্তকে পেয়ে বুকে জড়িয়ে কেঁদে ছিলেন অনিতাদেবী৷ পুলিশ বাবুদের হাত জোড় করে প্রণামও করেছিলেন৷ শনিবার টিনের চালা আর দরমার বেড়ার ঘরের মাটির বারান্দায় বসে সেদিনের মানসিক লড়াই আর স্বপ্নের কথা বলতে বলতে চোখে জল এল অনিতা দেবীর৷ চোখে মুখে এখনও ভয়৷ পাছে আবার কিছু হয়৷ এখন চিন্তা একটাই, ছেলেটাকে যদি একটু চিকিৎসা করানো যেত৷ অভাবের সংসারে চিকিৎসা করানোর পয়সা নেই৷ সরকার যদি একটু সাহায্য করত, তাহলে আর পাঁচটা ছেলেদের মতো হতে পারত সুদীপ্ত৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement