সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভরতি হন বৃদ্ধ। তবে অন্য কোনও করোনার (Coronavirus) উপসর্গ ছিল না। হাওড়া জেলা হাসপাতালে একদিনের মতো চিকিৎসা হওয়ার পরেই মৃত্যু হয় তাঁর। মৃতদেহ পরিজনদের হাতে ফেরতও দিয়ে দেওয়া হয়। ডেথ সার্টিফিকেট উল্লেখ করা হয় ওই বৃদ্ধের মৃত্যুর কারণ কার্ডিয়াক ফেলিওর। তবে সৎকারের পর জানা গেল বৃদ্ধ করোনা আক্রান্ত ছিলেন। হাওড়া (Howrah) জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষে এই কাণ্ডে সংক্রমণ আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গত বুধবার জগাছা থানার বকুলতলা লেনের বাসিন্দা বছর পঁয়ষট্টির ওই বৃদ্ধ ভরতি হন হাওড়া জেলা হাসপাতালে। শ্বাসকষ্ট থাকায় চিকিৎসকেরা সন্দেহ করেন হয়তো তিনি করোনা আক্রান্ত। তাই তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পাঠানো হয়। ইতিমধ্যেই বৃহস্পতিবার বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। সেদিনই বৃদ্ধের দেহ পরিজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ডেথ সার্টিফিকেটে উল্লেখ করা হয় কার্ডিয়াক ফেলিওরই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। এরপর দেহ সৎকার করা হয় তাঁর। পরিজন, প্রতিবেশীরাও বৃদ্ধের শেষযাত্রায় অংশ নেন।
ইতিমধ্যে শুক্রবার স্বাস্থ্যদপ্তরের তরফে জানানো হয়, ওই বৃদ্ধের করোনা রিপোর্ট হাতে এসেছে। তাতে জানা গিয়েছে, তিনি কোভিড আক্রান্তও ছিলেন। আর এ খবর রটে যাওয়া মাত্রই বৃদ্ধের শেষযাত্রায় অংশ নেওয়া সকলেই আতঙ্কে কাঁটা। তাঁরা বুঝতে পারছেন না এখন কী করা উচিত। যদিও স্বাস্থ্যদপ্তরের তরফে তাঁদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উপসর্গ দেখা দিলেই স্বাস্থ্যদপ্তরে যোগাযোগ করার কথাও বলা হয়েছে।
তবে এই প্রথম নয় এর আগেও একই ধরনের অভিযোগ উঠেছিল হাওড়া জেলা হাসপাতালের বিরুদ্ধে। সেবারও শিবপুরের দালালপুকুরের বাসিন্দা প্রৌঢ়ের মৃত্যুর দু’দিন পর রিপোর্ট আসে। সৎকারের পর ওই বৃদ্ধের পরিজনেরা জানতে পারেন করোনা সংক্রমণের কথা। তারপর ওই বৃদ্ধের বেশ কয়েকজন আত্মীয় করোনা আক্রান্তও হন। বর্তমানে হাসপাতালের আইসোলেশনে রয়েছেন তাঁরা। যাঁরা উপসর্গহীন তাঁরা রয়েছেন হোম কোয়ারেন্টাইনে।
তবে কীভাবে এমন সংক্রমক ব্যাধির ক্ষেত্রেও এতটা উদাসীন হচ্ছে সরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, এই দুই ঘটনার সামনে আসার পর সেই অভিযোগ উঠছেই। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, “গাইডলাইন অনুযায়ী কোনও করোনা আক্রান্তের দেহ সৎকারের জন্য পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার কথা নয়। তবে কখনও কখনও রিপোর্ট দেরিতে আসার ফলে এই সমস্যা হচ্ছে। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” তবে অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.