দীপঙ্কর মণ্ডল: গলির মুখ থেকে বড় রাস্তা হয়ে হাইওয়ে। উঁকি দেয় ব্যানার-হোডিং। কিন্তু শুনশান রাস্তায় দেখবে কে? করোনা আতঙ্কে সবাই গৃহবন্দি। এজেন্সি এবং মিডিয়া ওনারদের বিজ্ঞাপনদাতারা জানিয়ে দিয়েছেন, আপাতত তাঁরা কোনও টাকা দেবেন না। ফাঁপরে গোটা ইন্ডাস্ট্রি। রাজ্যের অন্তত দশ লক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষে আউটডোর বিজ্ঞাপনের কাজে যুক্ত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কর মকুবের আকুতি জানাল রাজ্যের ‘আউটডোর অ্যাডভ্যার্টাইজিং অ্যাসোসিয়েশন’।
সংস্থাটি গত সোমবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠায়। তাদের বক্তব্য- করোনা অতিমারি রুখতে মুখ্যমন্ত্রী যা করছেন তা গোটা দেশে তা অনন্য। রাজ্যের ১০ লক্ষ মানুষ আউটডোর বিজ্ঞাপনের সঙ্গে যুক্ত। লকডাউনের জেরে তাঁদের আয় বন্ধ। ১৫ মার্চের পর থেকে বিজ্ঞাপনদাতারা টাকা দেওয়া বন্ধ করেছেন। এমতাবস্থায় চলতি আর্থিক বছরে আউটডোর বিজ্ঞাপনের উপর কর মকুব করা হোক। ‘আউটডোর অ্যাডভ্যাটাইজিং অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি অরূপ চৌধুরি জানিয়েছেন, “লকডাউনের ফলে মিডিয়া ওনার এবং এজেন্সিগুলি ফাঁপরে। ফ্লেক্স প্রিন্টিংয়ে জড়িত লক্ষ লক্ষ মানুষের হাতেও কাজ নেই। বিজ্ঞাপনদাতারা টাকা দেবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। যেসব বাড়ির ছাদে হোডিং বা ব্যানার আছে সেই মালিকদেরও আমাদের বিনীত অনুরোধ আগামী ছয় মাস আমাদের ভাড়া মকুব করুন। পরের ছয় মাস প্রদেয় টাকার অর্ধেক দিতে পারব।”
বুধবার আউটডোর বিজ্ঞাপন সংস্থার কর্তারা বৈঠক করেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে কাজ বন্ধ থাকলেও কর্মীদের চলতি মাসে বেতন দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। অরূপবাবু জানিয়েছেন, “আমরা কর্মীদের ছাঁটাই করতে চাইনা। আয়ের পথ বন্ধ। অন্যদিকে প্রত্যেক সংস্থার ব্যাংকের লোন চলছে। আগামী মাসে বেতন দিতে পারব কি না জানিনা। রাজ্য সরকারের কাছে তাই চলতি বছরে কর মকুবের আকূল আবেদন জানাচ্ছি।” আবেদন জানিয়ে ই-মেল করা হয়েছে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং মুখ্য সচিব রাজীব সিনহাকেও। তাঁদের জানানো হয়েছে, ছোট, মাঝারি ও বড় ব্যবসায়ী-সহ আউটডোর বিজ্ঞাপনের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন রাজ্যের দশ লক্ষ মানুষ। কর্পোরেশন, মিউনিসিপ্যালিটি-সহ পঞ্চায়েত এলাকাতে আপাতত এক বছরের সমস্ত কর মকুব করা হোক।
কলকাতার একাধিক ফ্লেক্স কারখানার সঙ্গে এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল। সবাই জানিয়েছেন, কারখানা বন্ধ। কবে খুলবে তা অনিশ্চিত। কাজ বন্ধ থাকায় যাঁরা ডিজাইন করেন, প্রিন্ট করেন এবং রাস্তার পাশে লাগানোর কাজ করেন সবাই খুব হতাশায় ভুগছেন। এক কর্মী জানিয়েছেন, “আমি বাসস্ট্যান্ডে এবং বাসের পিছনে ফ্লেক্স লাগানোর করতাম। এমন চললে না খেয়ে মরতে হবে।” ইন্ডাস্ট্রির তরফে চিঠি পেয়েছেন কলকাতার পুর কমিশনার খলিল আহমেদও। মহানগরে আউটডোর বিজ্ঞাপনের কর কি মকুব হবে? পুর কমিশনার জানিয়েছেন, এই বিষয়ে মেয়র সিদ্ধান্ত নেবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.