ফাইল ফটো
বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতির নাম নিয়ে জল্পনা আরও উসকে দিলেন সাংসদ অধীর চৌধুরি। সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী চাইলে তিনি ফের এই দায়িত্ব নিতে রাজি বলে বৃস্পতিবার জানান অধীর। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নানের একটি চিঠি এই জল্পনাকে আরও একধাপ এগিয়ে দিয়েছে।
সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যর নাম সভাপতি হিসাবে চূড়ান্ত। এমনটাই খবর ছিল বিধানভবনে। তার প্রাথমিক প্রস্তুতিও চলছিল। নাম ঘোষণার পর বিধানভবনে তাঁকে স্বাগত জানানোর মানসিক প্রস্তুতিও সেরে রেখেছিলেন কর্মীরা। কয়েকদিন আগেই পরবর্তী প্রদেশ সভাপতির নাম ঘোষণা হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে তা থমকে যায়। আরও দু-একদিন ধৈর্য ধরার জন্য প্রদেশ নেতৃত্বকে নির্দেশ দেয় হাইকমান্ড। হয়তো আজকালের মধে্যই নতুন নাম ঘোষণা হবে। তার আগে কংগ্রেস সংসদীয় দলের নেতা অধীর চৌধুরির মন্তব্য শেষ মূহূর্তে মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। এদিন তিন বহরমপুরে জানান, এর আগে তিনি ওই পদ সামলেছেন। তবে তিনি সোনিয়া গান্ধীকে পছন্দমতো প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনের জন্য জানিয়েছেন। সভানেত্রী যদি তাঁর নাম প্রস্তাব করেন তখন আলোচনা করা যাবে বলে জানান অধীর চৌধুরি। বৃহস্পতিবার তাঁর এই মন্তব্যকে ঘিরে ফের নতুন করে জল্পনার উদয় হয়েছে বিধানভবনে। প্রদেশ নেতারা সকলেই অবগত সংসদীয় দলের নেতা হওয়ার কারণে অধীরের উপর কাজের চাপ থাকলেও হাইকমান্ডের কাছে তার গুরুত্ব অপরিসীম। গান্ধী পরিবারের সঙ্গে তাঁর এখন সরাসরি যোগাযোগ। তিনি চাইলেই নিজের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাতে দিল্লির ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারেন। এই অবস্থায় শেষ মূহূর্তে সভাপতির নাম নিয়ে ফের একবার চিন্তাভাবনা করতে পারে দিল্লি। সেক্ষেত্রে প্রদীপ ভট্টাচার্যর কপালে চিন্তার ভাঁজ পরতে বাধ্য।
এখানেই শেষ নয়। কিছুদিন আগে বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান অধীরের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। অদীরকে সভাপতি চেয়ে সোনিয়া গান্ধীকে গোপনে চিঠি লেখেন তিনি। আবেদন করেন, অধীর সংসদীয় দলের নেতার হওয়ার কারণে রাজ্য রাজনীতিতে তিনি একটি মুখ। সামনে বিধানসভার ভোট। এই সময়ে অধীরকে সভাপতি করা হলে রাজে্য কংগ্রেসের গুরুত্বও বাড়বে। তঁার লড়াকু ইমেজ কংগ্রেসকে ভোটের ময়দানে সুবিধা করে দেবে। বামেদের সঙ্গে দর কষাকষিতে এগিয়ে থাকবে প্রদেশ। তাই তঁাকেই ফের সভাপতি করা হোক। রাজনৈতিক মহলের ধারনা, প্রদীপ ভট্টাচার্য নরম প্রকৃতির মানুষ। বামেদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে দর কষাকষিতে কতখানি পেরে উঠবেন তা নিয়ে সন্দিহান প্রদেশ কংগ্রেসের অন্যান নেতৃত্ব। এছাড়াও আর্থিকভাবে প্রদীপবাবু অধীরের তুলনায় দুর্বল। রাজ্য পার্টি চালাতে গিয়ে আর্থিকভাবে তাঁকে দিল্লির মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে। অধীরের ক্ষেত্রে সেই সমস্যা নেই।
বিরোধী দলনেতার সঙ্গে বামেদের সম্পর্ক মসৃণ। আবার অধীরের সঙ্গে নরম গরমের সম্পর্ক বলেই জানে বিধানভবন। তখন মান্নান কেন অধীরের নাম প্রস্তাব করলেন। বিষয়টি ভাবাচ্ছে প্রদেশ নেতাদের। তাঁদের একাংশের যুক্তি, হয়তো বাম নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেই বিরোধী দলনেতা অধীর চৌধুরির নাম প্রস্তাব করেছেন। যাতে এই যুক্তি খাড়া করে অধীরকে জোটের পক্ষে আনা যায়। যে লোকসভা ভোটে বামেরা যেমন তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী দেয়নি। তেমন প্রদেশ সভাপতি হওয়ার ক্ষেত্রেও বামেরা তাঁর পক্ষেই সওয়াল করেছে। তবে শেষ হাসি কে হাসবেন অধীর নাকি প্রদীপ সেই সিদ্ধান্ত অবশ্য নেবেন সোনিয়া গান্ধীই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.