নিজস্ব সংবাদদাতা: প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী এবং জেলাশাসককে একের পর এক অশালীন মন্তব্যে বিঁধে বিতর্কে জড়ালেন সাংসদ তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি৷ সোমবার বহরমপুরের টেক্সটাইল মোড়ে দলীয় জমায়েতে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীকে তীব্র আক্রমণ করেন তিনি৷ শক্তি প্রদর্শনীর ওই মঞ্চ শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠে তাঁর অশালীন মন্তব্যের ফুলঝুরি ছোটানোর কেন্দ্র৷ জেলাশাসককেও এদিন অশ্রাব্য ভাষায় হুমকি দেন তিনি৷ প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীকে তুই-তোকারি করে এদিন রীতিমতো রকের ভাষায় গালিগালাজ করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি৷ মুর্শিদাবাদে পঞ্চায়েত, পুরসভা, জেলা পরিষদ হাতছাড়া হওয়ার পর নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সোমবার ওই জনসভায় হাজির হয়েছিলেন অধীর চৌধুরি৷ জনসমর্থন খুঁইয়ে এদিনের সভায় কার্যত অশালীন মন্তব্যের ফুলঝুরি ছুটিয়ে নিজের ক্ষমতা জাহির করার মরিয়া চেষ্টা চালান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি৷
প্রশ্ন উঠছে, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীকে অশালীন ভাষায় আক্রমণ করে এ কোন রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিচয় দিলেন তিনি? জেলাশাসককে হুমকির জেরে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও উঠেছে৷
সোমবার দলীয় জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রথম থেকেই গালিগালাজ শুরু করেন অধীর৷ জেলাশাসককে তুই-তোকারি বলে সম্বোধন করে তিনি বলেন, “তৃণমূলের জারজ সন্তান, তুই আমাদের ঠেকাবি? তুই তো মুখ্যমন্ত্রীর পা চাটা কুত্তা৷” এর পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও তুই-তোকারি করে গালিগালাজ শুরু করেন বহরমপুরের সাংসদ৷ প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “তুই মানুষকে সময় না দিয়েই ৫০০-১০০০ টাকার নোট বাতিল করলি৷ এই নোট বাতিলে কি দেশে বিপ্লব আসবে?” মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে তিনি বলেন, “আপনি নিজেকে সংখ্যালঘুদের মসিহা বলেন৷ মুর্শিদাবাদে সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু মানুষ বাস করেন৷ কিন্তু তাঁদের জন্য আপনি কিছুই করেননি৷”
নিজের জেলায় তৃণমূলের দাপটে অধীর চৌধুরি এখন আক্ষরিক অর্থেই কোণঠাসা৷ তাই উপস্থিত কর্মী-সমর্থকদের কাছে নিজের জঙ্গি ভাবমূর্তি বজায় রাখতে পুলিশকে প্রকারান্তরে পুড়িয়ে মারার হুমকি দেন৷ তিনি বলেন, “স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় চৌরিচৌরায় থানা জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল৷ পুলিশদের ধরে আগুনে ছুড়ে ফেলা হয়েছিল৷ মুর্শিদাবাদে পুলিশের অত্যাচারের বিরুদ্ধে কংগ্রেস কর্মীরা এখনও পর্যন্ত কিছু না বললেও আমাদের দুর্বল ভাববেন না৷” জেলায় কংগ্রেস এক ইঞ্চি জমি ছাড়বে না বলে মন্তব্য করেন অধীর৷
এদিন কংগ্রেসের ডাকে সভা হলেও কান্দি-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে সিপিএম সমর্থকরাও এসে জড়ো হন৷ বাস ও অন্যান্য গাড়ি করে সবাইকে আনা হয়৷ সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান৷ কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া সদস্যদের সদস্য পদ খারিজ করা হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন৷ এদিনের সভায় জেলার সব কংগ্রেস বিধায়ক হাজির থাকলেও উপস্থিত হননি কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার৷ তাই তাঁর দলত্যাগ নিয়ে ফের গুঞ্জন তৈরি হয়েছে৷ যদিও কংগ্রেসের দাবি, যানজটের কারণে অপূর্ববাবু সভায় আসতে পারেননি৷ এদিনের সভা নিয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি মান্নান হোসেন বলেন, ‘‘কংগ্রেসের এই সভার জনমানসে কোনও গুরুত্ব নেই৷ টাকা দিয়ে সভায় লোক আনা হয়েছে৷”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.