সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাথরপ্রতিমা বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে আটজনের প্রাণহানির ঘটনার পর নজরদারির অভাবের কথা মেনে নিল পুলিশ। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে এডিজ, দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম স্পষ্ট জানালেন, বাড়ি থেকে ১০০ মিটারের মধ্যে কারখানা ছিল। বাড়িতে মজুত বাজি থেকে বিস্ফোরণ ঘটেছে। সেই কারণে বিস্ফোরণে এতজনের প্রাণহানি হয়েছে। ১০ বছর ধরে এই কারখানা চলছিল। তবে তার কোন ধরনের লাইসেন্স ছিল, তা তদন্তের ব্যাপার। তিনি এও জানালেন, বাড়ি বাড়িতে এত নজরদারি সম্ভব নয়, মানুষের ন্যূনতম সচেতনতাও তৈরি হয়নি। তবে এই ঘটনার পর থেকে বাজি তৈরির কারখানা নিয়ে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে চলেছে পুলিশ। পাথরপ্রতিমার ঘটনায় বিস্ফোরণের ধারা নয়, ভারতীয় ন্যয় সংহিতার অন্যান্য চার-পাঁচটি ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে এডিজি, দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার জানান, ”আমরা জানতে পেরেছি, ওই বাড়িতে মজুত করা বাজি থেকে বিস্ফোরণ হয়েছে। এছাড়া সিলিন্ডারও বিস্ফোরণ হয়। তাতেই আগুন এতটা ভয়াবহ আকার নিয়েছে। তবে আগে বাজিতে বিস্ফোরণ তাপর সিলিন্ডার ব্লাস্ট নাকি সিলিন্ডার বিস্ফোরণের আগুনে বাজিতে লেগেছে, সেটা তদন্ত সাপেক্ষ। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা তা খতিয়ে দেখবেন। তবে বাড়িতে কেন বাজি মজুত ছিল, তা আমরা দেখছি।” এর আগে ২০২২ সালে এই কারখানার অন্যতম মালিক চন্দ্রকান্ত বণিক গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। পরে জামিন পান। তবে বাজি কারখানার লাইসেন্সের জন্য কোনও উদ্যোগ নিয়েছিলেন কিনা, তা তদন্ত করে দেখতে হবে। এডিজি, দক্ষিণবঙ্গের কথায়, ”আসলে বাড়ির কাছাকাছি কোনও বাজি কারখানা তৈরি হওয়ার কথা নয়। একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব রাখার কথা। এবার থেকে জনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে দূরে যাতে বাজি কারখানা তৈরি হয়, তার জন্য কারখানা মালিক ও বাজি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলবে পুলিশ।”
বিস্ফোরণের ঘটনা তো এ রাজ্যে কম ঘটেনি। তারপরও পুলিশ সতর্ক হয়নি কেন? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের মুখে পড়ে এডিজি, দক্ষিণবঙ্গ জানান, ”দেখুন একটা বিষয় বুঝতে হবে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাউকে সতর্ক করা সম্ভব নয়। মানুষকে সচেতন হতে হবে। বাড়ির মধ্যে যে জায়গায় আপনি রান্না করছেন, সেখানেই সিলিন্ডার মজুত করছেন, কাছাকাছি বাজি রাখছেন, তাহলে তো বিপদ হবেই। মানুষকে ন্যূনতম সতর্ক থাকতেই হবে।” অর্থাৎ নজরদারির বিষয়টি কার্যত উড়িয়েই দিলেন রাজ্য পুলিশের বড় কর্তা।
এ রাজ্যে বেআইনি কারখানা বন্ধ করতে বারবার পুলিশকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনায় যেখানে যা বেআইনি কারখানা, সব বন্ধ করে দিতে হবে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সেই সাবধানবাণী উড়িয়েও যে এধরনের কারখানা চলছে, পাথরপ্রতিমার ঢোলাহাটই তার প্রমাণ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.