অর্ণব দাস, বারাকপুর: বাঙালির প্রিয় উৎসবে এবার শোকের ছায়া। আর জি করে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়েই দেবীবরণ করতে হয়েছে। তাই আনন্দও যেন বিষণ্ণ এবার। একদিকে উৎসব, আরেকদিকে আন্দোলন চলছে। মণ্ডপে মণ্ডপে পুজো দেখার ভিড়। আর উলটোদিকে ধর্মতলায় জুনিয়র চিকিৎসকদের অনশন মঞ্চেও মানুষের জমায়েত। কেউ কেউ উৎসবকে পাশে সরিয়ে রেখে চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতিবাদ। এই তালিকায় রয়েছেন সেলিব্রিটিদের একাংশ। নবমীর সন্ধেবেলা পানিহাটিতে অভয়ার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত, যিনি গোড়া থেকে এনিয়ে প্রত্যেক প্রতিবাদ কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে রয়েছেন। আর জি করের নির্যাতিতার মা-বাবার সঙ্গে কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়লেন তিনি। কাঁপা অথচ দৃঢ় গলায় বললেন, ”এর শেষ দেখতেই হবে।”
নবমীতে ধর্মতলার অনশন মঞ্চ থেকে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। তাতে সাড়াও পড়েছে ভালোই। প্রচুর মানুষ তাঁদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে অভয়ার বিচারের দাবিতে জমায়েত করেন। এমনই সময়ে দেবলীনা দত্ত-সহ টলি সেলিব্রিটিদের একাংশ পৌঁছে যান পানিহাটিতে, অভয়ার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে। দুমাস আগে হারানো মেয়ের জন্য মা-বাবা ও পরিবারের অন্যান্যরা পুজোর কটা দিন বাড়ির সামনে ধরনা করছেন। এদিন সেখানে গিয়েছিলেন দেবলীনা। তাঁদের সঙ্গে কথা বলার পর বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কান্না সামলাতে পারেননি অভিনেত্রী। বার বার বলেন, ”ওঁদের কষ্ট দেখা যাচ্ছে না। এর শেষ দেখতেই হবে। আপনাদের সকলের কাছে আবেদন, এই লড়াই ছাড়বেন না। আরেকটা এমন ঘটনা যেন না ঘটে।” শুক্রবার বিকেলে সেখানে গিয়েছিলেন বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পলও।
সুবিচারের পথে কি এগোচ্ছে বিচার প্রক্রিয়া? এই প্রশ্নের জবাবে দেবলীনা দৃঢ়তার সঙ্গে বলছেন, কে কী করছে বা করবে, জানি না। এটুকু জানি, আমরা এর শেষ দেখেই ছাড়ব। কে বলতে পারে, একদিন আমার নিজের ঘরেও এমনটা হবে। নিজেদের ঘরে আগুন লাগা পর্যন্ত অপেক্ষা করলে তো হবে না। যেভাবেই হোক, এর অন্তিম পর্যায় দেখতে হবে।” কী কথা হল বাবা-মায়ের সঙ্গে? দেবলীনা জানান, তাঁরা এখনও শুধু মৃত্যুর দিনটার কথাই বলছেন। মেয়ের মৃত্যু সংবাদ দিয়ে হাসপাতাল থেকে তাঁদের তড়িঘড়ি ডেকে পাঠানোর পর কেন ৩ ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হল? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে চলেছেন কন্যাহারা পিতা-মাতা। আর সেই যন্ত্রণা সীমাহীন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.