সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: কখনও রাতের অন্ধকারে জলের পাইপ ভেঙে দেওয়া হচ্ছে, তো কখনও স্কুল চত্বরে বসছে মদের আসর। প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। দুষ্কৃতীদের হাত থেকে স্কুলকে বাঁচাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়ে স্থানীয় মানুষদের সাহায্য চাইলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। ঘটনায় শোরগোল পড়েছে দুর্গাপুরের কাঁকসায়।
স্কুলের নাম গোপালপুর উত্তরপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়। পড়ুয়ার সংখ্যাও নেহাত কম নয়। কিন্তু গত দু’বছর ধরে স্কুলে দুষ্কৃতীরা রীতিমতো তাণ্ডব চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, পুজো কিংবা গরমের ছুটির সময়ে তো কথাই নেই। স্কুল যখন খোলা থাকে, তখনও রাতে স্কুল চত্বরে ঢুকে পড়ে দুষ্কৃতীরা। কখনও স্কুলের জলের পাইপ লাইন ভেঙে দেওয়া হয়, তো কখনও বসে মদের আসর। যেখানে পড়ুয়ারা মিড-ডে মিল খায়, রবিবার রাতে সেই ডাইনিং হলের অ্যাসবেস্টাসের একাংশ ভেঙে দিয়ে চলে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। ফলে বর্ষার সময়ে পড়ুয়ারা কোথায় মিড-ডে মিল খাবে, তা সমস্যায় পড়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সোমবার সকালে পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, অভিভাবক, এমনকী স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘটনাটি জানান গোপালপুর উত্তরপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রভাত সাহা। শুধু তাই নয়, স্কুলে ডেকে এনে সকলকে দেখানো হয়, কীভাবে তাণ্ডব চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা।
স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, রাতে দুষ্কৃতী তাণ্ডবের ঘটনা বহুবার প্রশাসনকে জানানোও হয়েছে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। উলটে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য আরও বেড়েছে। অগত্যা স্কুলকে বাঁচাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্য চেয়েছেন গোপালপুর উত্তরপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রভাত সাহা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি দিয়ে তাঁর কাতর আবেদন, ‘আজ বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকার মন ভারাক্রান্ত। এই ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বিদ্যালয়ের তরফে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুরোধ করছি, আপনার বিদ্যালয়কে বাঁচান।’ এদিকে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের এমন আবেদনে শোরগোল পড়েছে এলাকায়। কাঁকসার বিডিও সুদীপ্ত ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘বিষয়টি জানিনা। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। পুলিশকে বলব তদন্ত করে দেখতে। আমিও নজর রাখব।’
ছবি: উদয়ন গুহরায়
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.