ছবি:প্রতীকী।
স্টাফ রিপোর্টার: ইচ্ছার বিরুদ্ধে প্রেম করেছে ছেলে। আর সেই রাগে ছেলের প্রেমিকার বাড়িতে চড়াও হয়ে অ্যাসিড হামলা চালাল বাবা। ওই বৃদ্ধের ছোড়া অ্যাসিডে ঝলসে গেলেন ছেলের প্রেমিকার মা। রবিবার রাতে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া থানা এলাকার মছলন্দপুরে।
তবে হামলা চালিয়ে সে নিজেও নিস্তার পায়নি। আক্রান্ত মহিলা তাকে কুঠার দিয়ে সজোরে আঘাত করেন। তারপর এলাকাবাসী এসে তাকে ধরে গণপ্রহার দেয়। অ্যাসিড আক্রান্ত মহিলাকে উদ্ধার করে বারাসত হাসপাতালে ভরতি করা হয়। অন্যদিকে গুরুতর জখম অবস্থায় হাবড়া হাসপাতালে ভর্তি অভিযুক্তও। প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার জন্য অথবা স্বামীর সন্দেহের শিকার হয়ে অ্যাসিড হামলার শিকার হয়েছেন বহু তরুণী। তবে এদিন হাবড়ায় যে ঘটনা ঘটেছে তা বেনজির বলা যেতে পারে। কারণ ছেলের সঙ্গে প্রেম করার অপরাধে ছেলের বাবা তাঁর প্রেমিকার বাড়িতে অ্যাসিড নিয়ে হামলা চালিয়েছে এমন ঘটনা সাম্প্রতিক অতীতে দেখা যায়নি। মছলন্দপুরের রাজবল্লভপুরের বাসিন্দা অভিযুক্ত ওই বৃদ্ধের নাম আবদুল সাত্তার বিশ্বাস (৭০)। স্থানীয় মানুষ ও পুলিশ সূত্রে খবর, গত কয়েক বছর ধরে আবদুলের ছেলে সাবির আলির (২৫) সঙ্গে ওই এলাকার এক তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তবে সে কথা তাঁর বাবা জানতেই বেঁকে বসে। কোনও মতেই ওই তরুণীর সঙ্গে ছেলের সম্পর্ক বরদাস্ত করতে রাজি ছিল না আবদুল। এই নিয়ে প্রতিদিনই বাবা-ছেলের মধ্যে বিবাদ লেগেই থাকত বলে জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। বিস্তর ঝামেলাও হয়েছে দু’জনের মধ্যে। গত কয়েকদিন আগে আবদুলের সঙ্গে ছেলের বিবাদ চরম পর্যায়ে পৌঁছয়। সপ্তাহখানেক আগে অভিমানে বেঙ্গালুরু চলে যান সাবির। আর তাতেই আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে আবদুল। ছেলে বাড়ি ছাড়ার জন্য ওই তরুণীই দায়ি বলে দাবি করে সে। রবিবার রাতে তাঁর বাড়িতে চড়াও হয় সে।
পুলিশ সূত্রে খবর, একটি বোতলে অ্যাসিড নিয়ে ওই তরুণীর বাড়িতে হামলা চালায় আবদুল। তাকে বাড়িতে ঢুকতে দেখেই রুখে দাঁড়ান মেয়ের মা। কিন্তু ক্ষিপ্ত আবদুল কোনও কথাই শুনতে রাজি ছিল না। ওই প্রৌঢ়া তাকে বাধা দেওয়ায় বোতল সমেত অ্যাসিড তাঁর গায়ে ছু়ড়ে মারে আবদুল। পালটা ঘর থেকে কুঠার নিয়ে আবদুলের মাথায় সজোরে আঘাত করেন ওই প্রৌঢ়া। বাড়িতে চিৎকার শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। রক্তাক্ত অবস্থাতেই আবদুলের উপর শুরু হয় গণপ্রহার। তরুণীকে ঝলসানো অবস্থায় উদ্ধার করে বারাসত হাসপাতালে ভরতি করা হয়। অন্যদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় হাবড়া থানার পুলিশ। আবদুলকে উদ্ধার করে হাবড়া হাসপাতালে ভরতি করে তারা। তাকে পুলিশি নজরদারিতে রাখা হয়েছে। হাসপাতাল থেকে ছুটি দিলেই আবদুলকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.