ব্রতদীপ ভট্টাচার্য: সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে অশালীন মন্তব্য। হাবড়া থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করল দুই যুবককে।
ষষ্ঠীর সকালের ঘটনা। হাবড়ার শ্রীনগর এলাকার আমবাগান পুজো মণ্ডপের উদ্বোধন করতে এসেছিলেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ওই উদ্বোধনের ছবি দিয়ে ওই ক্লাবের এক সদস্য তমাল বণিক ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। পোস্টটিতে তমাল লেখেন-মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তাঁদের পুজো উদ্বোধন করেছেন। তাঁকে সংবর্ধনা দিতে পেরে আমরা অত্যন্ত খুশি। এদিকে সেই পোস্টের তলাতেই রামপ্রসাদ দাস ওরফে রাহুল দাস নামে এক ব্যক্তি তাঁর মন্তব্যে মন্ত্রীকে ‘চোর’ বলে সম্বোধন করেন। এরপরেই নড়েচড়ে বসে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। অভিযোগ জানানো হয় হাবড়া থানায়।
স্থানীয় তৃণমূল নেতা সীতাংশু দাস জানিয়েছেন, “আমরা ফেসবুকে মন্তব্যটা দেখি। সঙ্গে সঙ্গে থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। ওই যুবক জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মন্ত্রীর সম্বন্ধে যে মন্তব্য করেছে তা অত্যন্ত কুরুচিকর। পুলিশ তদন্ত করে জানতে পেরেছে অভিযুক্তের বাড়ি মসলন্দপুরে। নিন্দনীয় কাজ করেছে ওই যুবক। তার কঠোর শাস্তি চাইছি।” উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ার বাউগাছি এলাকা থেকে অভিযুক্তকে ধরা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম রামপ্রসাদ। রাহুল নামেই সে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট চালাত। তার বাড়ি রাজবল্লভপুর এলাকায়। ধৃতকে রবিবার বারাসত জেলা আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তার চার দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
এদিকে গ্রেপ্তার হওয়ার পর অভিযুক্ত যুবক জানিয়েছে, “আমি অত্যন্ত গর্হিত কাজ করেছি। এখন বুঝতে পারছি। সোশ্যাল সাইটে মন্ত্রীর সম্বন্ধে এমনটা লেখা উচিত হয়নি।” ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা এমনকী ওই ক্লাবের কর্মকর্তারা। তাঁরা জানান, সোশ্যাল সাইটে এখন যে যা খুশি তাই লিখছে। একজন জনপ্রতিনিধি সম্বন্ধে কতটা বলা যায় তা নিয়ে সচেতন নয় কেউ। পুজোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আমরা মন্ত্রীকে অতিথি হিসেবে ক্লাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। তার তলায় ওই যুবক লিখেছে, মন্ত্রী চোর। ও শুধু মন্ত্রী নয়, ক্লাবের সদস্যদের ভাবাবেগেও আঘাত করেছে। ঘটনার পর রাজনৈতিক মহলে এ নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়।
হাবড়া শহর তৃণমূল সভাপতি সীতাংশু দাস হাবড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘‘খাদ্যমন্ত্রী তথা এলাকার বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সম্মান ও ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্যই এ ধরনের মন্তব্য করা হয়েছে।’’ তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, বছর চৌত্রিশের রাহুল বারাসতের একটি গেঞ্জি কারখানার কর্মী। জেরায় সে পুলিশকে জানিয়েছে, সে কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নয়। তার পরিবারের সদস্যদেরও একই বক্তব্য। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, ছেলের এহেন কাজে তাঁরা অত্যন্ত লজ্জিত। খাদ্যমন্ত্রীর সম্বন্ধে এ মন্তব্য করে ছেলে যে ঠিক করেনি তাও মেনে নিয়েছেন পরিবারের লোকেরা।
খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের আশঙ্কা, গোটা ঘটনার পিছনে বিজেপির মদত রয়েছে। তাঁর কথায়, রাজনৈতিক ভাবে এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হবে। বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি বিপ্লব হালদার অবশ্য বলেন, ‘‘যিনি এই মন্তব্য করেছেন তিনি আমাদের দলের কর্মী নন। আমরা কেন এ সব বলতে যাব। বিজেপি নিচু সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করে না।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.